Friday, 8 September 2017

গরম চা

কাগজের কাপ থেকে একটু গরম চা চলকে হাতে পড়লো। সকালে চা টা হাতে নিয়েই ক্যাম্পাস এর সবুজ ঘাস এর ওপর পা রেখেছিলাম। দিনের শুরুর ওই সময়টা আমার খুব প্রিয়, খুব ভালোলাগার আর একান্ত আপনার। ওই সময়টা সাধারণত কারোর সাথে ভাগ করতে আমার ভালো লাগেনা। কেমন যেন ছোট থেকে আমার বিশ্বাস যে ওই সময় টাতে সূর্যদেব তার সমস্ত মিষ্টতা ঢেলে আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকেন, দেখেন সারাদিন টা আমরা কিভাবে সাজিয়ে তুলি, তাই আমার ওই সময়টাতে সারাদিনের প্ল্যানিং করতে খুব ভালো লাগে, সব সময় যে সে প্ল্যানিং মেনে চলা হয় তা নয়, বরং উল্টোটাই হয় বেশি তবু এ যেন আমার এক বিলাসিতা। 

আজ ও সেরকম ই বিলাসিতায় নিজেকে ভাসিয়ে চা এর কাপ এ চুমুক দিচ্ছিলাম।  কাগজের পাতলা চা এর কাপ। চা হাতে পড়তেই হটাৎ মনে পড়লো কলকাতার কোনো এক বর্ষার বিকেলের কথা। আমার ই কোনো কাজে আমি আর বাবা গিয়েছিলাম মৌলালি, ফেরার পথে বাবার একটু চা খেতে ইচ্ছে হয়েছে , বিকেলবেলা। বাবা চা খেলে আমিও যথারীতি সেটাই খাবো , অন্য কিছু নয়, অতএব আমিও জোর করে চাই নিলাম। কাগজের কাপ নয়, মাটির ভাঁড় এর ধোয়া ওঠা চা, কিন্তু কিছুতেই চুমুক দিতে পারছিনা, ভয় হচ্ছে যদি জিভ পুড়ে যায়? অবশেষে বাবা দেখিয়ে দিলো কিভাবে জিভ কে না লাগিয়ে শুধু ঠোঁট লাগিয়ে আলতো করে চা চুমুক দিয়ে খেতে হয়।  বাড়িতে মা এর কড়া শাসন এ চা এর বদলে তখন ও দুধ, আর বাবা আর দিদির আদরে সেই আমি তখন কলেজ যেতে শিখে গেলেও বড় হওয়ার চৌকাঠ পেরোয়নি তখনো, তাই দোকানের মাটির ভাঁড় এ চা এর চুমুক দেয়াটা ছিল একটা দারুণ ব্যাপার তখন। আর একটা খুব বড় এক প্রশ্ন ছিল আমার মনে, দুধ ঢকঢক করে খেতে হয় কিন্তু চা কেন লোকে চুমুক দিয়ে খায়? আর দুধ খেলে জিভ পুড়ে যায়না, কিন্তু চা খেলে কেন পুড়ে যায়? বাবা আর দিদির ওপরেই ছিল আমার যত প্রশ্নের জুলুম, ওই দুটো মানুষের ধৈর্য ও ছিল খুব। মন দিয়ে সব উত্তর দিতো তারা। 
আজ সকাল বেলায় অল্প একটু চা হাতে পড়াতে সঙ্গে সঙ্গে সেটা মুছে নিয়ে আবার চুমুক দিতে দিতে হটাৎ নিজেকে কেমন একটা বড় কেউ মনে হোলো , আমার সেই ছোট্ট আমিটা কেমন একটা অবাক চোখে যেন আমাকেই জিজ্ঞেস করতে লাগলো আর তোমার গরম লাগলোনা হাত এ ? এতো তাড়াতাড়ি চা কফি কিকরে খাওগো তুমি? এটাতো দুধ নয়, জিভ পুড়ে গেলোনা? 

নাহ আর আমার জিভ পুড়ে যায়না, আর গরম লাগেনা। 

Thursday, 7 September 2017

ছিন্নপাতা

আজ অনেকদিন পরে আবার লিখতে বসলাম। সম্পর্ক গুলো  খুব বেশি রকমের কৃত্রিম হয়ে যাচ্ছে। না ঠিক তও নয়। তবু যেন কেমন একটা হয়ে যাচ্ছে। আঘাত দিতে চাইনা কাউকে, তবু যে অনেক আঘাত দিয়ে ফেলি, যা বলতে চাইনা, যা আমার  নয় তাই সবাইকে বলি, আর যে কথা আমার মানের তাকে লুকিয়ে রাখি।.কিন্তু কেন? কিসের জন্যে এই লুকোচুরি, কিসের এই টানাপোড়েন, কি চাইছি, কি হচ্ছে র কি বা করছি কিছু জানিনা।
শুধু বারবার ছুটতে ছুটতে চলে যেতে ইচ্ছে করছে আমার সেই গোধূলি বেলার খোলা ছাদে।  সেই যে যেখানে ওই এতটুকু একটা মেয়ে তার ছোট্টমনে কোথাও কোনো দুঃখ কি তার কষ্ট সে যতই ক্ষুদ্র হোকনা কেন, তা বলতে ছুটে যেত ছাদে , সূর্যাস্ত দেখতো অপলক চোখে, কেমন যেন ঘোর লেগে যেত দেখতে দেখতে নিচে যেই দেখতে পেতো তার বাবা আসছে সাইকেল করে স্কুল শেষে বাড়ি ফিরে , অমনি সব দুঃখ সব কষ্ট ভুলে সেই শিশুমন ঝলমল করে ছুট্টে যেত তার জীবনের সব থেকে প্রিয় মানুষের কাছে। আজ এই যে এত অসহিঞ্ষুতা, সেটাকি ওই একজন মানুষের অভাবে। যে মানুষ টাকে কোনো কিছু বলতে হতোনা, বোঝাতে হতোনা মুখ ফুটে, যে আপনি ই সব বুঝে যেত আজ সেই মানুষ টাকে যদি একবার পেতাম, একবার যদি আমাকে সে বুকে জড়িয়ে নিয়ে বলতো কি হয়েছেরে বোকা মেয়ে, এই তো আমি আছি...সঙ্গে সঙ্গে মুহূর্তে বিদায় নিতো আমার এই অস্থিরতা, আমি আবার ফিরে যেতে পারতাম আমার রূপকথার পৃথিবীতে, কি নিশ্চিন্ততা, কি শান্তি। কেন ওই শান্তি ভগবান কেড়ে নিলো জানিনা, আমার সূর্য তো এখনো সেই এক ই ভাবে অস্ত যায়, এক ই ভাবে ফিরে  আসে, তাহলে আমার চেনা পৃথিবী কেন বদলে গেলো। কি যেন পাচ্ছিনা, কি যেন নেই, কিসের যে অভাব, জানিনা আমি বাবা। শুধু একবার তোমাকে জড়িয়ে ধরে আমার জীবনের গভীর নিশ্চিন্ততা পেতে চাই।  আর কিছু চাইনা। সে

ইচ্ছেনদী

আমার ল্যাব টা মাউন্ট sinai এর ১০ তলায়, আর আমার ওয়ার্কিং ডেস্কটা একদম জানালার ধারে , বিশাল জানালা। মনে হয় মেঘ গুলো এখুনি ঢুকে পড়বে এর মধ্যে। ...