ছোট থেকে খুব স্ট্রং কিছু কিছু principle নিয়ে বড় হয়ে ইদানিং কালে একদম নীতিবাগীশ হয়ে গেছিলাম। খারাপ ভালো ঠিক ভুল এর এতো রকম বাধা নিষেধ নিজেই সৃষ্টি করেছিলাম যে জীবন হটাৎ একদম একদিন চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিলো, "রে মূর্খ, এতদিন অনেক খারাপ ভালোর বেড়াজালে নিজেকে বন্দী করে রেখেছিস, এবারে দেখ তো কেমন লাগে"। সব কিছু যে ঠিক ঠাক নিজেও বুঝে উঠতে পেরেছি বা বুঝছি তা নয়। তবে ধীরে ধীরে একটা কুয়াশা সরছে বোধয়।
দিনে দিনে, আমার নিজের কাছেই, নিজের এতো দিনের সযত্নে লালিত ধ্যান ধারণা একটু আহত হলো বৈকি, কিন্তু আঘাতের মাহাত্ম ক্ষতের বেদনার থেকে এতটাই বেশি ভাবে অনুভূত হলো যে তার উপলব্ধি মনকে করলো স্থির, করলো শান্ত। বুঝলাম অনেক সময় আপাত দৃষ্টিতে ঘটে যাওয়া অনেক কিছুর বিশ্লেষণ আমরা ভুল ভাবে করি, যে মুহূর্তে আমরা নিজেরা তার ভেতরে এসে পড়ি , সত্যিকারের বোধ তখন আসে। তার আগে যা কিছু হয় তার মধ্যে আসল বোধের থেকে তার ভান টাই অনেক বেশি থাকে।
আজ আবার বড় বেশি করে আমাদের গঙ্গার ধারের সেই ব্ট গাছ দুটোর কথা মনে পড়ছে। আমার কাছে এই মুহূর্তে তার কোনো ছবি নেই, কিন্তু আমার মনের আঙিনায় বড় সুস্পষ্ট তা।
দুটো গাছ কে জড়িয়ে আছে আলাদা আলাদা ভাবে অন্য আরো দুটো গাছ, আর ও অনেক লতাপাতা। আর ওই দুটো গাছ নিজেদেরকে জড়িয়ে আছে, শুনেছি বহু বছর ধরে এভাবেই একে অপরকে এরা রক্ষা করে আসছে, কত ঝড় জল, এমনকি ৭৮ এর যে বন্যা হয়েছিল, সেই বন্যাও এদের কোনো ক্ষতি নাকি করতে পারেনি। আর সেটা সম্ভব হয়েছে এদের ওই অবিশ্ছেদ্য ভাবে একে অপরের পাশে থাকার জন্যেই। দিন পেরিয়ে মাস পেরিয়ে বছর হয়েছে, মাঝখানে কিছুটা দূরত্ব রেখে বেড়ে ওঠা যৌবনের দুই গাছ পরিণত হয়েছে মহীরুহে। মাঝের দূরত্ব সেভাবেই বজায় থেকেছে। ভেতরে ভেতরে গভীর হয়েছে শিকড়, ডাল পালা গ্যাছে মিশে অথচ আপন স্বতন্ত্রতা বজায় রেখে। মাটির ওপরের দূরত্ব অপরিবর্তিত, অনিশ্চল থেকে শীতের রুক্ষতায় একসাথে ঝরেছে পাতা, বসন্তে উঠেছে কচিপাতায় সেজে। বৃষ্টিধারায় হয়েছে সিক্ত, চাঁদনী রাতে হয়েছে শিহরিত। আর সযত্নে বেড়ে উঠতে দিয়েছে ওদের নির্ভরতায় থাকা পাশের লতা কে। ফলে, ফুলে রঙে গন্ধে ভরে উঠেছে এদেরকে ঘিরে বেড়ে ওঠা লতা, গুল্ম রাজী। আকাশ বাতাস মুখরিত হয়েছে মৌমাছির গুঞ্জনে, উজ্জ্বল হয়েছে প্রজাপতির পাখায় আর এই দুই বৃক্ষরাজি তৃষ্ণার্তের মতো গণ্ডূষ ভরে পান করেছে চারপাশের রূপ, রং, গন্ধ। পার্থিব যা কিছু থেকে পেয়েছে অপার্থিব শান্তি। হয়েছে সমৃদ্ধ। ছুঁয়েছে আকাশ। আরো আরো উঁচুতে উঠেছে, সমস্ত বন্ধন কে বড় ভালোবেসে উঠেছে সকল বন্ধনের উর্দ্ধে।
আমাদের ওখানকার গ্রামের মানুষ এদের কে পুজো করে, কোনো শিলা রাখেনি, শুধুই ওই দুইজন ব্টবৃক্ষ কে সমীহ করে নিজেদের সমস্ত শ্রদ্ধার্ঘ্য এখানে এসে অর্পণ করে। ছোট থেকে বহুবার ওখানে গেছি, দেখেছি, গল্প শুনেছি কিন্তু কোনোদিন ভাবিনি কিছুই। আজ প্রায় ১৫০০ km দূরে বসে এক বহু পরিচিত ঘটনা যেন কি ভীষণ মহান হয়ে আমার নিজের কাছেই ধরা পড়লো। সেদিন কাছে থেকে যা ছিল নিছক এ একটা প্রাকৃতিক ঘটনা আজ দূরে থেকে তা হয়ে উঠলো বহুল অর্থবহ। এখনকার এই আবীর মাখানো গোধূলী আকাশের অপার্থিব সৌন্দর্যের মাঝে হটাৎ যেন সর্বাঙ্গে কাঁটা দিয়ে উঠলো, চোখ বন্ধ করে শুনতে পেলাম আমার গঙ্গার ঘাটের ছলাৎ ছলাৎ শব্দ, চারপাশের বর্তমান সমস্ত কোলাহল যেন স্তব্ধ বিমুগ্ধ হয়ে আমার ভেতরে ঘটে যাওয়া এক আলোড়ন কে স্থিত হবার সময় দিলো। পাশের পথচলতি গাড়ির হর্ন কিছুক্ষনের জন্যে হয়তো বা আমাকে উপরে আনতে পারলো বর্তমানে, কিন্তু চেনা গঙ্গার ঘাটে ফিরে যেতে দেরি হলোনা আমার।
চোখ বন্ধ করে শুনতে পেলাম পাতায় পাতায় ঘষা লাগার ঝিরঝিরানি শব্দ। সূর্য হয়তো বা ওখানে এতক্ষনে আজকের মতো গঙ্গাবক্ষে আপনার রক্তিম আভা রেখে নিয়েছেন বিদায়। ঠিক ভুল ভালো খারাপ এই সব কিছুকে জয় করে এইসব কিছুর থেকে অনেক দূরে ওই বটবৃক্ষকুঞ্জ আপন মায়ায় আপন মহিমায় আপন সৌন্দর্য্যে বিভোর হয়ে সাক্ষী হয়ে চলেছে আজকের সূর্যাস্তের। ঠিক যেভাবে সে সাক্ষী থেকেছে ফেলে আসা কালের, ঠিক যেভাবে সে সাক্ষী হবে আগামীর অভিমানের। হয়তো কিছু আগেই সামনের শিব মন্দিরের পুরোহিত মশাই দিনান্তের শেষ পুজো অর্পণ করে গ্যাছেন। দূরে কোনো মাছ ধরার নৌকা কি নোঙর করলো, হবেও বা। সারাদিন পরে তীরে ভেরার স্বস্তি বোধয় গঙ্গা পাড়ের বাতাস কে আরো একটু স্থির করলো। হাত তুলে প্রণাম করলো ওই মহিরুহ কুঞ্জ কে। আর আমার গঙ্গাপাড়ের সেই চেনা স্বস্তি এক অচেনা শান্তি দিয়ে আমার সমস্ত মনটাকে যেন পরম আদরে আলিঙ্গন করে রইলো। কি পবিত্র, কি সুন্দর, কি স্থির আর কি গভীর সেই উপলব্ধি। সমস্ত শরীর মন যেন ঝিমঝিম করে উঠলো, বুকের ভেতরে জমে থাকা সেই দুপুর থেকে এক অব্যক্ত কান্না, অথচ এক অন্যরকম ভালোলাগা যেন একাত্ম হয়ে গেলো পৃথিবীর কোন এক প্রান্তে বসে থাকা এক অচেনা, নাম না জানা লেখিকা এর বোধ এর সাথে। স্থান, কাল, দেশ, পাত্র এর সমস্ত বাধা পেরিয়ে আমার বোধ, আমার উপলব্ধি আমার ই চোখের সামনে উঠলে ভেসে। বারবার আবার করলাম সৌন্দর্য্যের স্তব। আবারো মনে পরে গেলো আমার সেই ভীষণ প্রিয় লাইন "আমার চেতনার রঙে , পান্না হলো সবুজ / চুনী উঠলো রাঙা হয়ে/ আমি চোখ মেললাম আকাশে/ জ্বলে উঠলো আলো", মনে পড়লো " darkness is the veiled bride / silently waiting for the errant light to return to her bosom/ the burden of self is lightened when I laugh at myself".
এ লেখা আমার কাছে ছিল নতুন , আগে কখনো পড়িনি , কিন্তু যে অমৃতের গুনে এ আমি পেলাম তার গভীরতা আমার মনের অন্তস্থল পর্যন্ত করলো স্নিগ্ধ। সেখানে চাওয়া পাওয়ার ঝঞ্ঝা নেই, নেই প্রত্যাশার কোলাহল, আশা সেখানে জীবনকে শুধু করে চলে সমৃদ্ধ। আর সেই পবিত্রতা ভালো মন্দ এর সমস্ত দ্বন্ধকে নিঃশেষ করে দিয়ে, সব গ্লানি মুছে দিয়ে আগুনের মতো ওঠে জ্বলে। এ উপলব্ধি ভাষায় প্রকাশের মতো শব্দাবলী আমার শব্দভাণ্ডারে অন্তত নেই। তবে নিজের ভালোলাগার আংশিক উৎস কে এখানে ঢেলে দেবার লোভ সামলাতে পারছিনা ---
After a while you learn
the subtle difference between
holding a hand and chaining a soul
and you learn
that love doesn’t mean leaning
and company doesn’t always mean security.
And you begin to learn
that kisses aren’t contracts
and presents aren’t promises
and you begin to accept your defeats
with your head up and your eyes ahead
with the grace of woman, not the grief of a child
and you learn
to build all your roads on today
because tomorrow’s ground is
too uncertain for plans
and futures have a way of falling down
in mid-flight.
After a while you learn
that even sunshine burns
if you get too much
so you plant your own garden
and decorate your own soul
instead of waiting for someone
to bring you flowers.
And you learn that you really can endure
you really are strong
you really do have worth
and you learn
and you learn
with every goodbye, you learn…