Friday, 17 December 2021

পাতা ঝরার দিনে

রাস্তার দুধারের ঝরা পাতা দেখে মনে পরে গেলো সেই ছোটবেলার পড়া "আমলকি বন্ কাঁপে যেন তার বুক করে দুরু দুরু / পেয়েছে খবর পাতা খসানোর সময় হয়েছে শুরু" যদিও রবি ঠাকুর এটা শরৎ কালের জন্যে লিখেছিলেন , কিন্তু আমি কি করব, আমার এটাই এখন খুব appropriate মনে হচ্ছে। সব কিছু কি আর সব সময় বাঁধা নিয়মে চলে। 

চারপাশে আজ ছিল অনেক রঙের সমারোহ। না বসন্তের মাতাল করে দেওয়া বাঁধাহীন উন্মত্ত রং নয় এ। এ যেন প্রকৃতির নীরব কান্নার পরে শান্ত সমাহিত হয়ে সূর্যাস্ত দেখা। সেখানে কোনো চাওয়া নেই, পাওয়া নেই, প্রত্যাশা নেই। কথা নেই, বার্তালাপ নেই। শুধুই যেন যাওয়া আসার মাঝে এক স্থির, শান্ত, ধ্যানমগ্ন ভাবমূর্তি। রাস্তার দুধারে পথের পরে কেমন যেন মায়াময় হয়ে ঝরেছিলো হালকা হলুদ হয়ে আসা শুখনো পাতা। দুপাশের গাছ, কোথাও কোথাও সেখানে ম্লান হয়ে আসা সবুজ আবার কোথাও বা নতুন এর আগমন এ গর্বিত কচি পাতা। আর ওই দূরে, যেখানে বৃক্ষরাজি তাদের অভিজ্ঞতা দিয়ে জয় করে এসেছে সব বদল, সেখানে নেই কোনো আসা যাওয়া। অনেক পরিবর্তন, আগমন বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে আজ তারা স্থির, অচঞ্চল, ধ্যানমগ্ন, নিষ্পলক। কেমন এক গাঢ় গম্ভীর গায়ের রং ওদের, যা মনের মধ্যে এক সম্ভ্রম নিয়ে আসে, মনে হয় বাবার মতো, দাদুর মতো, বড়দের মতো। সবার মাথার ওপরে দাঁড়িয়ে, সবাইকে রক্ষা করে চলেছে। বড় বেশি করে যাদের আমি রোজ খুঁজি। বড় বেশি করে যাদের অভাব আমি রোজ অনুভব করি। 

সময় টা ঝরাপাতার, আসন্ন শীতের রুক্ষতা, প্রকৃতিকে দৈন, শুষ্ক করে দেবার আগে প্রকৃতি যেন তার শেষ সম্বল উজাড় করে দিয়ে নিজেকে সাজিয়েছে। 

এই সৌন্দর্য্যের মধ্যে দাড়িঁয়ে কেমন যেন আপনা থেকে মাথা নাতো হয়ে আসে, প্রণাম করতে ইচ্ছে করে এই সৌন্দর্য্যকে, হাত জড়ো করে বলতে ইচ্ছে করে, এভাবেই কালের নিয়ম কে মেনে নিতে দিয়ো, চারপাশকে ভালোবাসতে দিও, আর খুব ভালো থেকো। 
স্বরচিত পাঠ 
পাতা ঝরার দিনে 
তিস্তা 

No comments:

ইচ্ছেনদী

আমার ল্যাব টা মাউন্ট sinai এর ১০ তলায়, আর আমার ওয়ার্কিং ডেস্কটা একদম জানালার ধারে , বিশাল জানালা। মনে হয় মেঘ গুলো এখুনি ঢুকে পড়বে এর মধ্যে। ...