নীরব , নিভৃত অলস মধ্যাহ্ন। বসন্তের মিষ্ট রৌদ্র, শয্যা তে আসিয়া পড়িয়াছে , বাহিরে ককিলের কুহু স্বর্গ লোকের আকাশ করেছে মুখরিত। পারিজাতের মৃদু সুগন্ধ এ চারিদিক হইয়াছে আমোদিত।
দেবরাজ ইন্দ্র তাঁর দ্বিপ্রহরীক আহার সাঙ্গ করিয়া সুখ শয্যায় আসিয়া আধ শোওয়া হইয়া , তাম্বুলদানী হইতে একটি তাম্বুল মুখে দিলেন। আর দেবী ইন্দ্রানী তখন আপনার সিক্ত কেশরাশি সযত্নে কপ্পুর দানীর উপর হইতে সরাইয়া ওনার পাশে আসিয়া আবদার করিলেন একটি গল্প বলার।
দেবরাজ ইন্দ্র কহিলেন "দেবী , আজ তোমাকে মর্তবাসীর এক মজার গল্প বলিব শুন।" "না দেব, অনুরোধ করি, এখন এই বিশ্রাম এর সময় , এমন কিছু বলিয়া ও শুনিয়া আমি আমাদের এই মুহূর্ত বিষন্ন করিতে চাহিনা, কারণ মর্তবাসীর গল্প মানেই তো অবিশ্বাস, দুঃখ , বেদনা, হানাহানি, খুনোখুনি, গালি ,সেখানে কোনো সম্পর্ক নেই, কেহ সম্পর্ক তৈরি করিতেও জানেনা, করিলেও রাখিতে পারেনা , উহাদের কথা আমি আর শুনিতে চাহিনা। কহিলেন দেবী।
"না , না, দেবী , ইহা তোমার ভ্রম। যদিচ তুমি ঠিক ই কহিয়াছ বেশির ভাগ মানুষ্ ই উপরোক্ত গল্প এর ই চরিত্র হতেই প্রয়াসী , তবে অনেকে এমন এখনো আছে, যারা সুন্দর পৃথিবী কে সুন্দর রাখিতে জানে আর তারা প্রতি নিয়ত রচনা করিয়া চলেছে এক সুন্দর রূপকথা।তাদের একান্ত আপনার অথচ কাউকে আঘাত না করা এক পুষ্প কোমল মন কে শত ঝঞ্ঝা তেও তারা ঠিক বাঁচিয়া রাখিতে পারিয়াছে। কিন্তু তাদের আশপাশ এর পাশবিক আঘাত? যা বারংবার তাদের দিকে ধেয়ে আসিয়াছে, আসিবেও হয়ত আবার ও, তাকে সুন্দর ভাবে সযত্নে পাশ কাটিয়া জানো ইহারা রচনা করিয়া চলিয়াছে এদের আপনার স্বর্গ। জানো দেবী, সে স্বর্গ ও কিন্তু কিছু কম নয় আপনার এই স্বর্গের অপ্পেক্ষা। আর জানো এই সুন্দরের পূজারীরা ও কিন্তু সংখ্যা লঘু নয়, শুধু এদের যুদ্ধ , এদের জয় , বড় নীরব , তাই তুমি শুধু ওই অসুন্দরের ধ্বজাধারী দের দেখিয়া মর্ত হইতে মুখ ফিরিয়া নিওনা প্রিয়ে , অসুন্দরের মধ্য হইতে আইস আমরা সুন্দর কে লই।"
দেবরাজ ইন্দ্র র ছলছল চক্ষুর দিকে চাহিয়া দেবী কাছে আসিয়া স্বামীর হস্ত আপনার হস্তে লইয়া কহিলেন " বলো। "
(চলবে )
No comments:
Post a Comment