Sunday, 28 July 2019

নাবলা যত গল্প ছিল আমার মনে
তোমার সনে
সব পাপড়ি হয়ে ছড়িয়ে আছে
হয়তো কৃষ্ণচূড়ার বনে
নীল আকাশ মেঘের ভেলা
উতল হাওয়ায় ধায়
আমার বলার ছিল
শুধু তোমার শোনার ছিলোনা আর দায়
এবারে আমি চুপ করলাম
জানি নেই নেই আর কিছু প্রয়োজন
তুমি তোমায় পেয়েছো ফিরে
রাখা রইলো সব আয়োজন
চাঁপার আলো , জুঁই এর সুবাস
থাকলো অপেক্ষায়
তোমার নেই আর কোনো দায়
তোমার সকল নিয়েই তোমায় পাওয়া
দুঃখ এবং সুখে
তোমার কথা কঠিন করে
বড় কঠিন করে বাজে এ বুকে
তুমি থেকো তোমার মতো
সুরের পথ টি চিনে
শুধু নাবলা কত যেন গল্প ছিল আমার মনে
তোমার সনে
রইলো পরে পাপড়ি হয়ে
কুড়িয়ে নিও কখনো
যদি তোমার কখনো পরে মনে
একটু করো যত্ন। 


Friday, 19 July 2019

বদলে যাওয়া পৃথিবীতে থমকে যাওয়া আমি
আমার বৃষ্টিস্নাত স্নিগ্ধ বেলায়
কেন বিষন্ন বনভূমি
মেঘলা আকাশ, বৃষ্টি, ভেজা হাওয়ায়
বাণিহারা সবকিছু
থাকনা নাহয়
উতল হওয়া মানা
তবু মনে আমার বেজেই চলে
"ও যে মানে না মানা ".......

শব্দের ভারে বাতাস হয়েছে ভারী
তাই আজ নাহয় লেখা হোক চুপকথা।
নাহয় কিছু স্তব্ধ মুহূর্তের, মৌনতায় ধরা দিক গভীরতা।
ধ্যানমগ্ন চারিদিক, মুখরিত নীরবতা।
আজ সব ছেড়ে দিও
শুধু প্রাণ পাক সঁপে দেওয়া সখ্যতা।।

ধ্যানমগ্ন পৃথিবীতে মুখর নীরবতা
মৌন হয়েই প্রাণ পাক শুধু সঁপে দেওয়া সখ্যতা 

Friday, 12 July 2019

বেহিসেবি সময় কখনো কখনো হিসেবি হয়ে ওঠে খুব। বিকেলবেলার পড়ন্ত রোদ টা যখন কাঁচের জানলা দিয়ে উঁকি মেরে যায়, আর মন না বসা মন কিছুতেই আর work desk এ বসে না থেকে আকণ্ঠ ডুবদিতে চায় পাশের সবুজ টাতে। ঠিক তখন আনমনে হাত হটাৎ না বলা মোবাইল তুলে নেয়। একসময় কথা ফুরোতোইনা। হোয়াটস্যাপ, এমনি msg , ঘন্টার পর ঘন্টা ফোন কল। তারপরেও মনে হতো কিছুই তো বলা হলোনা। যেন মনে হতো জন্ম জন্মান্তর ধরে জমে আছে কত না বলা কথা। তারপর হটাৎ করে বেহিসেবি সময় চোখে চশমা লাগিয়ে হিসেবের খাতা খুলে বসে। পাওয়া না পাওয়ার নিক্তি তে বিচার হয় সম্পর্ক। যত্নে লাগানো ফুলগাছ গুলোর মাঝখান গুলোতে হটাৎ একরাশ শূন্যস্থান। একসময় সেই শূন্যস্থান ভরাতে যত্ন নিতো ফুলের পাপড়ি, প্রজাপতির পাখারা। আজ সেখানে হটাৎ জন্মে যায় আগাছা। একেবারে ভর্তি হয়ে যায়। অঘ্রানের শিশির টুপটুপিয়ে পড়তে গিয়েও থমকে দাঁড়ায়, ও এখানে তাহলে আগাছার ই থাকার কথা ছিল। 
বাতাস ও বইতে গিয়েও ইতস্তত করে। যাবো কি যাবোনা। হটাৎ সবকিছুর মধ্যে থেকে সহজাত spontaneity নিয়েছে বিদায়।  বেহিসেবি মন ভয় পায়। আপন নিয়মে চলার গতি থমকে যায়। হিসেবের পাতায় মাপা হতে থাকে দিন রাত্রির কমা বাড়া। আদুরে রাত্রি হটাৎ মুখ লুকিয়ে ফুঁপিয়ে ওঠে। বাধাহীন পথ ও আর অনন্ত হয়না, একটু এদিক থেকে ওদিকে গেলেই নেভিগেটর লেডি ও যান্ত্রিক গলায় বলে ওঠে, u have to take the right turn or ১০ mins to reach ur destination . বেহিসেবি পথ হিসেবি হয়েছে। 

Wednesday, 10 July 2019

আদর মাখা ছোটবেলাতে বিকেলবেলা গুলো আসতো ভীষণ মিষ্টি হয়ে। মা চুল টানটান করে দিয়ে দুপাশে দুটো ঝুঁটি বেঁধে দিতো। বাবা একদম একটা করে চুল বাঁধা পছন্দ করতোনা। কোঁকড়ানো চুলে দুটো করে চুল বাঁধলে ঠিক যেন ফুলের মতন থোকা হয়ে থাকে। চুল বাঁধা হয়ে গেলে মা কাজল পড়াতে চাইতো আর বাবা বলতো না কাজলে চোখ নষ্ট হয়ে যাবে। ফলত অনেক বড় বয়স পর্যন্তই আমি মায়ের হাতে ঘরে পাতা কাজল পড়েছি। আর য্খন actually মেয়েরা কাজল এমনকি eyeliner tiner ও কি জিনিস জেনে গেছে , তখন থেকে আর কাজল পড়াই হয়নি আমার। ফলে অভ্যেসটাই চলে গেছিলো কাজল পড়ার। 
চুল বেঁধে কখনো সাদা, কখনো নীল কখনো সেই প্রিয় লাল রঙের ফুলফুল ফ্রক পরে বাবার হাত ধরে আমি বেড়াতে বেরোতাম। দিদি বলতো ওই যে বেড়াতে চললেন মহারানী। আমি লাফিয়ে লাফিয়ে প্রথমেই যেতাম পাশের মাঠে, যেখানে বাদামি রঙের গরুটা বাঁধা থাকতো, সেখানে। তাকে খাওয়াতাম কচি বাঁশপাতা। আর ওর গলায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে কি যে গল্প করতাম কিজানি। তারপরে আমাদের গন্তব্যস্থল হতো সামনের ছোট্ট কালভার্ট টা। সেখানে একদিক থেকে পাতা ভাসাতাম আর অন্য দিকে সেই পাতাটা ভেসে বেরোচ্ছে কিনা দৌড়ে দেখতে যেতাম। তারপরে সামনের মাঠ এ তে একটু বসে ফিরে আসা। এই ছিল আমার আর বাবার প্রাত্যহিক রুটিন। ক্লাস চেঞ্জ হয়, একটা একটা করে ধাপ বদলায়, কালভার্ট এর পাতা ভাসানোর সাথে সাথে শিখে ফেলি স্রোতের অঙ্ক , জোয়ার ভাঁটার হিসেব , গতি এমন কত কি। তবে শুধুই অঙ্ক , বিজ্ঞান নয়, ওই পাতা খাওয়ানো আর স্রোতের যাওয়া আসা দেখতে দেখতে কখন বাবা তার ছোট্ট মেয়ের মধ্যে দিয়ে দিয়েছিলো আরো অনেককিছু। কোনো কোনোদিন সেই বেড়াতে যাবার ব্যতিক্রম হলেই মনখারাপ হতো। তারপর আরো বড় হলাম, কখন বেড়াতে যাওয়া রূপান্তরিত হলো দাবার প্রাকটিস আর সন্ধের ছবি আঁকার মধ্যে। তারপর আরো...আরো....এখন আর সেই বিকেল আসেনা, ল্যাব থেকে যাতে বিকেলে বেরোতে পারি, তারজন্যে সবাই খুব রাগায় ও আমায়। কি করে বোঝাই ওদের বাড়িতে যে আমার এক আকাশ বিকেল আছে, সন্ধে আছে। আছে মরসুমি পাখির ঘরে ফেরা। 

তবু সেই বিকেল আসেনা। এখানের গরু গুলো ও যেন আর আদর করে ঘাড় নেরে দাঁড়িয়ে থাকেনা। চারিদিকের পৃথিবীর মতন এরাও বড় হয়ে গাছে যেন, ব্যস্ত হয়ে গেছে, মুডি হয়ে গেছে। কচি পাতাও আর হাতের নাগালে থাকেনা, ডাল নুয়ে দেবার ও কেউ নেই যে আর ওরাও বোধয় ওই যে সবার মতো মুডি হয়ে গেছে, ইচ্ছেমতন আসবে বা আসবেনা। তাই আর ছুঁতে যাইনা ওদের কাছে, দূর থেকেই দেখি, ভালো আছে। সিম্প্লিসিটির হিসেব গেছে হারিয়ে। তবু সেই সব কিছুর মধ্যে আমার বাবার সেই জোয়ার ভাঁটার গল্প সাথে নিয়ে আজ ও সন্ধ্যে বেলার আমি অবাক হৈ। কখনো মনখারাপ লুকিয়ে কখনো মনখারাপ  ভুলে হেসে উঠি। বুকের মাঝের তোলপাড় গলার কাছে কি যেন একটা আটকে রেখে যখন সেই বিকেলের কালভার্ট খুঁজে চলে মনে মনে, বাইরে অচঞ্চল হাসিতে তখন হয়তো কেউ বলে ওঠে তুই তো খুব খুশি। আর আমার ভেতরের আমিটা চোখ বন্ধ করে দেখতে পায় , কখনো স্রোতের টানে, কখনো স্রোতের প্রতিকূলতায় পাতাটার এগিয়ে চলা, নিজ গন্তব্যে। পাঁকে আটকে গেলে হবেনা। চরৈবেতি চরৈবেতি। এগিয়ে চলাই জীবন। স্থির অচঞ্চল ভাবে এগিয়ে চলা। 

Thursday, 4 July 2019

সপ্তপদী

রেজিস্ট্রি অফিসে চার হাত এক করে দিয়ে যখন রেজিস্ট্রি অফিসার অঙ্গীকার করতে বলে একসাথে থাকার, তখন তাঁকেই যেন মনে হয় ভগবান। কিংবা অগ্নি সাক্ষী করে একে অপরকে সঙ্গে করে চলার সেই অঙ্গীকার : সপ্তপদী। দুই মন তখন পরিপূর্ণ ভাবে চায় একে অপরের কাছে সমর্পন। সেই অঙ্গীকার সেই  শপথ , সে ভগবান যীশুর সামনেই নেওয়া হোক বা আল্লা কে স্মরণ করে, মন্দিরেই হোক বা বৌদ্ধ প্যাগোডাতে সব ক্ষেত্রেই তার মাহাত্ম এক ই। শপথ নেবার মাহাত্ম, তাকে মেনে সারাজীবন চলার যে অঙ্গীকার, কত স্বপ্ন কে সত্যি করার যে গভীর অভীপ্সা, এ সব ই ভীষণ ভাবে সত্যি। সেই সময় খুব কম মানুষ ই ভাবে সে নিজে কতটা সুখী হবে, বরং ভাবে পাশের মানুষটাকে সে যেন সুখী করতে পারে। 

 চার্চের ফাদার ই হোন বা সামনে বসে থাকা পুরোহিত, মন্ত্রোচ্চারণের সঙ্গে সঙ্গে দুই তরুণ মন কখনো সেই শব্দ সমষ্টির মধ্যে থেকে বুঝে নিতে চেষ্টা করে অন্তর্নিহিত অর্থ আবার কখনো বা সেই শব্দ শুধুই শব্দ হয়ে কানের কাছে গুঞ্জন সৃষ্টি করে আর নিজ নিজ মনের ভিতরে এতদিনের জমে থাকা কত শত স্বপ্নকে আরো একবার নাড়িয়ে চারিয়ে সাজিয়ে গুছিয়ে নিতে থাকে । ছেলেটির হয়তো বা মনে পরে বাড়ির সামনে ঘন ঘন সাইকেল করে যাওয়া আসার কথা, আচ্ছা যে মুখটা একবার একটুখানি দেখার জন্যে একদিন কত অপেক্ষা করেছে আজ থেকে সেই মুখ সর্বক্ষণ সবসময় একরাশ হাসি আর অনেক খুশি নিয়ে শুধু তার জন্যে অপেক্ষা করে থাকবে? এই চিন্তায় পুলকিত হয়ে আড়চোখে হয়তো বা পাশের জনকে একটু দেখে নিতে ইচ্ছা করে। সেই তাকানোও গোপন থাকেনা, লুকোচুরি এই চাওয়া পাশের মানুষটির মধ্যেও সঞ্চারিত হয়ে তাকেও করে তোলে শিহরিত। এইভাবে বুঝে বা না বুঝে সম্পন্ন হয় এই সপ্তপদীর অনুষ্ঠান। সেই অনুষ্ঠানের রেশ মনের মধ্যে রেখে শুরু হয় সংসার সাগরে তরী বাওয়া। সহজ তো নয়, সারাজীবনের জন্যে করা একদিনের আকুল শপথ, সারাজীবন স্বাচ্ছন্দে পালন করা। 
ফলে কখনো কখনো ঝড় ওঠে, সংসার তরী টলোমলো হয় ও বা। সেই যে অগ্নিসাক্ষী করেই  হোক বা পরমেশ্বর কে সাক্ষী রেখেই হোক, সেই যে সপ্তপদীর শপথ "Now let us make a vow together. We shall share love, share the same food, share our strengths, share the same tastes. We shall be of one mind, we shall observe the vows together. I shall be the Samaveda, you the Rigveda, I shall be the Upper World, you the Earth; I shall be the Sukhilam, you the Holder - together we shall live and beget children, and other riches; come thou, O sweet-worded girl!"

শয্যা , শয়নে , স্বপনে, সবসময় পাশে থাকার সেই অঙ্গীকার। কখনো বা হয় ব্যাহত। দুই দেহ এক হয়ে গিয়ে এক আত্মা, এক মনন হয়ে যাবার যে স্বপ্ন সপ্তপদীর সময় শপথ নেয় দুই সবুজ মন, অনেক ক্ষেত্রেই তা শুধু ওই মন্ত্র হয়েই থেকে যায়। হয়তো দুই দেহ কখনো এক ই হয়না, এক ছাদের তলায় থেকেও দুই দেহ কখনোই হয়তো হয়না এক। কখনো দেহ মিশে যায়, মন থাকে আলাদা আলাদা জগতে, নিজের নিজের মতন করে। কখনো শুধু মাত্রই জৈবিক কারণে হয় মৈথুন। সন্তান থাকে সেতু হয়ে, ব্যক্তিগত স্বার্থের উর্ধে গিয়ে দুই মন আবার নামে সমঝোতায়, তারপর একসময় আবার হয়তো নিজ নিজ স্বত্বাকে ভুলে দেহের মিলন মনের চাহিদাকে করে পরিপূরণ। 
আর এইভাবেই ভিন্ন ভিন্ন ভাবে হয়ে চলে সপ্তপদী গমন। 
কখনো কখনো ওই যে ওপরে যিনি বসে আছেন, তিনি নেন পরীক্ষা। এই চলার পথের পাথেয় মজবুত কিনা দেখার জন্যে হয়তো কখনো বা ঝড় ওঠে সংসার তরীতে। আর তখন ই বোঝা যায় যে এই সপ্ত গমন এর পথ এতো পলকা নয়, অনেক গভীর এর শিকড়। পাশের মানুষটার এতটুকু শরীর খারাপ সমগ্র পৃথিবীকে দুলিয়ে দেবার জন্যে যথেষ্ট। চারপাশের সমস্ত সম্পর্ক সমস্ত কিছু এক নিমেষে তুচ্ছ হয়ে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে যায়। আর এই বোধয় সেই সপ্তপদীর কাহিনী। সেই শপথ গ্রহণের মাহাত্ম। 








ইচ্ছেনদী

আমার ল্যাব টা মাউন্ট sinai এর ১০ তলায়, আর আমার ওয়ার্কিং ডেস্কটা একদম জানালার ধারে , বিশাল জানালা। মনে হয় মেঘ গুলো এখুনি ঢুকে পড়বে এর মধ্যে। ...