কুচ কামিনী, সুধা যামিনী/ বধূয়া, বৃথা বিনে তব
এই গন্ধসলিলা সুখ রজনী
এই গন্ধসলিলা সুখ রজনী
আমাদের মন জল এর মতন, যে পাত্রে রাখবে , যে ঢালে ঢালবে সেই ঢালে সেই মতন ই সে ঢলবে।আবার কি জানো , জল কে যেমন ফোটাতে হয়, ফিল্টার করতে হয় তেমনি মন কেও ফোটাতে হয়, ফিল্টার করতে হয়। ভালো কথা, ভালো গান, সুর, ভালো সঙ্গের মধ্যে দিয়ে তাকে নিয়ে যেতে হয়, সৎ সংকল্পের মধ্যে তাকে প্রতিষ্ঠিত করতে হয়। শিশুর মতন সরল জিজ্ঞাস্য নিয়ে এ পৃথিবীর সকল কঠিন রাস্তা কে অনায়াস এ সহজ করে নিতে হয়। এই ভাবে নিজেকে প্রতিদিন উন্নীত করতে হয়, কেউ আসবেনা তোমার সাধুতা বিচারে, তুমি নিজেই নিজের বিচারক। তবে একদিন সময় তোমাকে এর প্রতিদান দেবে। দেবেই। তাই যদি তুমি এই কঠিন পৃথিবীর সুন্দরতম দিক টি খুঁজে নিতে চাও তবে সেই সুন্দরের কাছে যাও। কিন্তু কোথায় পাবে সেই সুন্দরকে। পাবে তোমার মননে, ভালো সঙ্গে, সুন্দর ফুল, ভালো লেখা।খুঁজে নাও সেই পুরা পুরাতনী পুরাণের ধারা, ঢেলে ফেলো তাকে আধুনিকতার ঢালে। মেঘমল্লার এর সুরে খুঁজে পাও বিরহী যক্ষ আর যোগিনী উমাকে।
শুধু এখন বলি, হে প্রেমিক, যে উমার কালজয়ী প্রেম মহেশ্বর কে সাধনা করে লাভ করিতে হইয়াছিল, তাহাকে অমন দৈনিন্দিন করিয়া দিওনা। তাহাকে সযত্নে সাজায়ে রাখিয়ো। দেখোনা, সব পূজার সব ফুল হয়না, সব ঋতুতে সব ফুল ফোটেনা, জনিবে রাতের শিউলি রাতে আমন করে ফুটত পারে বলেই ভোরে তা সবুজ ঘাসের গালিচাকে অমন পবিত্র করিয়া তুলতে পারে। অপেক্ষা করিয়ো সেই শুভক্ষণ সুন্দর মুহূর্তের জন্যে।গহীন রাতের তামসাবৃত হয়ে শুধুই কামনার বশবর্তী হয়ে নারী পুরুষের একে অপরের যে কাছে আসা তাতে কামনা অধিক হয়ে ওঠে।প্রেম যায় হারিয়ে সে কাছে আসার মধ্যে কামনা সন্তুষ্ট হয় বটে তবে মনের গহীনে লুকোনো যে সুপ্ত সুন্দর তাহা জাগ্রত হয়না। সে সুধা আস্বাদনের সৌভাগ্যই বা কজনের হয়েছে, সে সুধার খবর জানেই বা কজনে, যে জানে সে মৃগনাভীর সুগন্ধে মাতোয়ারা মৃগ যেমন হন্যে হইয়া শুধুই সেই মৃগনাভিতেই বিলীন হতে চায়, সেও তেমনি করিয়া শুধু ওই সুধাতেই নিজেকে মগ্ন করিতে পারে।শুধু সব কথা, সব ভাব সব জায়গায় অনিয়ো না, তাহাকে যত্নে রাখিয়ো, রাতের মালকোষ যেমন চাঁদনী রাতের গভীরতাতে সম্পূর্ণতা পায় , তেমনি ই প্রকৃত মুহূর্তএ সম্পূর্ণতা পায় তোমার সকল অপ্রাকৃত প্রাকৃত ইচ্ছা কামনা বাসনা।
বাসনা স্বাভাবিক তবে তাকে ভিতরে রাখো, সেই গভীর রাতের গহীন মোহে যখন চাঁদ নরম হয়ে স্নেহ ভোরে তাকিয়ে থাকে, সেই রাতের নীল আকাশের মতন গভীর রঙের শাড়িতে নিজে হাতে করে তোমার প্রিয়াকে সাজিয়ো। পরিয়ে দিও যুথির মালা, রজনীগন্ধা, বেলি, মোমের আলোয় যত্ন করে তৈরি কোরো সেই পরিবেশ যা জন্ম জন্মান্তেরেও মানুষ পায়না। সব শরীর কবিতা হয়না, সব শরীরে কবিতার ছন্দ রুদ্ধ হয়ে যায়না, সবাই সব ছন্দ খুঁজে নিতেও পারেনা। খুঁজে নিও সেই ছন্দ , চিনে নিও সেই গন্ধ। শুধু অপেক্ষা কোরো সেই প্রকৃত মুহূর্তের জন্যে। তার আগে কিছু বোলোনা। বোলোনা। দিওনা সেই মুহূর্ত, সেই সময় নষ্ট করে।
সন্যাসীর জীবন আলাদা, মনন আলাদা, আর সংসারের মনন আলাদা। ওরে সংসারী মন, সংসার ই যদি করবি তো সেভাবে কর যেভাবের ঘোরে মহেশ্বর নিজেকে উমা পতি করে উমা চরণে নিবেশিত করেছিল। সেই ভাব খুঁজে নে। সেই মন কে তৈরি কর।
No comments:
Post a Comment