Tuesday, 25 September 2018

অপেক্ষা

অপেক্ষা শব্দটা শুনলেই আমার কেমন যেন মনকেমন করতো আগে। একটু ভয় ও বা। জানিনা কেন অপেক্ষা শুনলেই মনে হতো সেই অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা রাজকাহিনীর বর্ণনাতে পাওয়া মেবারের রানীর প্রতীক্ষা কখন তার প্রিয়তম এসে পিছন থেকে হটাৎ চোখ টিপে ধরবে। অথবা অপেক্ষা রত রমণীর সেই বিশেষ মানুষটার জন্যে ভাবতে ভাবতে সেলাই করা, হটাৎ অন্যমনস্কতায় হাতে ছুঁচ ফুটে গেল আর সেই শ্বেত শুভ্র রুমালের ওপর এক ফোঁটা রক্ত পরে রুমাল টাকে যেন অস্তাচলের রঙে রাঙিয়ে দিলো, আহা কি অপূর্ব সে বর্ণনা। সমস্ত মেবার যেন চোখের সামনে দুলে ওঠে সেই বর্ণনার মধ্যে দিয়ে। সেই প্রতীক্ষা তার সমস্ত আকুতি নিয়ে যেন আপনা থেকে প্রার্থনা করতে লাগে, ফিরিয়ে দাও, ফিরিয়ে দাও। 

মনে পরে যায় অপেক্ষা , বাবার আসতে দেরি হলে, খাতার পেছনে লুকিয়ে ঠাকুরকে চিঠি লেখার সেই অভ্যেস। কি বিশ্বাস ও বা। তারপরে হটাৎ বাবা চলে এলে, বাবাকে জড়িয়ে ধরে কি শান্তি। 
সেই বিশ্বাস ও নাড়া খেলো, যখন অপেক্ষা চিরন্তন হয়ে গেল। ছোট মেয়ে টাকে হটাৎ এক ধাক্কায় অনেকটা বড় করে দিয়ে ওই ঠাকুর বুঝিয়ে দিলো, এই অপেক্ষা এত সহজে মিটবেনা। তখন থেকে অপেক্ষা শব্দের সাথে জুড়ে গেল কান্না। 

জীবন যুদ্ধ, প্রতিনিয়ত শান্তনা দেওয়া, নিজেকে অন্যকে,..অপেক্ষা তখন থেকে বাঁচার রসদ। আজ হচ্ছেনা, একদিন হবে।  সেই দিনের অপেক্ষা। অপেক্ষা তখন আশা।

আর আজ, অপেক্ষা দিয়ে গেল একটা সুন্দর শান্ত হাওয়া। ধৈর্য্য আর অপেক্ষা শব্দ গুলো বাবা খুব ব্যবহার করতো। বারবার বলতো, জীবনকে সময় দিস আর শান্ত হয়ে নিজের সমস্ত কর্তব্য দায়িত্ব পালন করে যাস, তোর যা পাবার যেটুকু তোর বরাদ্দ তার জন্যে ধৈর্য্য ধরে, সঠিক ভাবে অপেক্ষা করে থাকলে ঠিক সময়ে, ঠিক সেটা তোর কাছে আসবে। তার আগে তাড়াহুড়ো করিসনা, সব নষ্ট হয়ে যাবে তাহলে। বাবা যতদিন কাছে ছিল, তখন শুধু তাড়াহুড়োই করে গেছি। বাবার কাছে না থাকাটা ধীরে ধীরে বাবার বলা সমস্ত কথার মানেকে নতুন ভাবে বুঝতে শিখিয়েছে আমাকে। কিছু বুঝেছি। অনেক হয়তো এখন বাকি। তবে, আজ সন্ধ্যের ধুপ ধুনোর গন্ধের মাঝে, গোধূলির লালের রেশ তখন পুরোটা মুছে যায়নি, এদিকে আকাশ সেজে উঠতে চলেছে কুমুদিনীর স্বর্ণাভ আভায়, আকাশের আর একদিকে আবার মেঘের ঘনঘটা। এমন হাজারো রঙে যখন প্রকৃতি নিজেকে সাজিয়ে তুলে ধরেছে, তখন, শাঁখ, ঘন্টা, প্রদীপের আলো আর আমার ধুপ ধুনোর গন্ধে চারিদিক ভীষণ পবিত্র ভীষণ সুন্দর হয়ে, শান্ত হয়ে আমার কাছে থমকে দাঁড়ালো। আর কেমন যেন খুব ভেতর থেকে একটা বিশ্বাস, এক অনন্য অনুভূতিতে আমাকে দিয়ে ঠিক বাবার বলা ওই বোধ টাকেই ফিরিয়ে দিয়ে গেল। মনে হলো, "আমাদের যা কিছু তা আমাদের ই থাকবে।" চারপাশের সমস্ত দায়িত্ব পালন করার পরে, সবাইকে ভালো রাখার পরে , সেদিনের সেই ছোট্ট মেয়েটার ঠাকুর, সেই যে গভীর বিশ্বাস থেকে সে ঠাকুরকে চিঠি লিখতো, সেই বিশ্বাস সে নিশ্চই আবার ফিরে পাবে আর ওই ছোট্ট মেয়েটার ঠাকুর একদিন নিশ্চয়ই তাকে ইচ্ছেপূরণের ঝুলি নিয়ে বসতে দেবে। হ্যাঁ , শর্তটা মনে আছে, অপেক্ষা টা মনের গভীরে সত্যি সত্যি থাকতে হবে। genuinely. আর চাওয়াটাও। তার মধ্যে যেন কোনো ভান না থাকে, কোনো ফাঁকি না থাকে। তাহলে যে চাঁদ এর জন্যে এতদিন অপেক্ষা করেছিলাম, সেই চাঁদ সেদিন আকাশে আসবে। সঙ্গে থাকবে নতুন ভোরের প্রতিশ্রুতি। 

আর সেই মিষ্টি প্রতীক্ষার কথা ভাবতে ভাবতে, আজ চলো স্বপ্ন দেখি নতুন মঙ্গলময় সূর্য্য ওঠা ভোরের। পাখির কাকলীতে ভোরে উঠুক চারিদিক। আগামীর আশায় নতুন করে বুক ভোরে নি শ্বাস আর শুরু করি কর্মময় কর্তব্য। সেই কর্তব্য পূরণের মধ্যে দিয়ে ধীরে ধীরে আমাদের স্বপ্নরা ডানা মেলুক, নতুন কচি সবুজ পাতায় ভরা চারাগাছ আলোয়, ছায়ায়, মায়ায় ধীরে ধীরে পরিণত হোক সুন্দর মহীরুহে। 

আর বারবার আমরা প্রাণ ভোরে নি, বলি, "কি আনন্দ, কি আনন্দ, দিবারাত্র নাচে মুক্তি, নাচে বন্ধ "......আর এইভাবেই করি অপেক্ষা। নিজেদের আমি গুলোকে ফিরে পাবার অপেক্ষা, ফিরিয়ে নেবার অপেক্ষা। ফিরিয়ে দেবার অপেক্ষা। আর যা কিছু আমাদের তার কাছে ফিরে যাবার অপেক্ষা। এই অপেক্ষার মধ্যে কোনো হতাশা নেই, দুঃখ নেই, অশান্তি নেই...এই অপেক্ষার মধ্যে শুধু আছে শান্তি, আছে অনন্য আশা আর প্রতিটা দিনের প্রতিটা ভোরের কাছে কাছে প্রার্থনা আমাদের সমস্ত ক্ষণ কে যেন সুন্দরতা দিয়ে ভোরে দিয়ে আমাদের পৌঁছে দেয় সেই মুহূর্তগুলোর কাছে। তার জন্যে অপেক্ষা। 

শিউলি ফুটেছে কি? 

Wednesday, 19 September 2018

অন্য মায়া

গত সাত বছর ধরে এই আরাবল্লী পাহাড়ে ঘেরা ছোট্ট জায়গাটা আমাকে তার সমস্ত সজীবতা দিয়ে ঘিরে রেখেছে। ঘুম ভেঙে ওঠা নরম চাঁদের আলো , শীতের পাতা ঝরা , বসন্তের পলাশ, বর্ষার সবুজ আর সারাবছরের আমার এই চাঁপা; প্রলেপ দিয়েছে আমার ক্ষত তে। ফিরিয়ে দিয়েছে আমার সেই আমি টাকে। যে সত্যি র জন্যে কারোর কাছে মাথা নিচু করেনা। মেরুদন্ড সোজা রেখে, মাথা উঁচু করে , অথচ নমনীয় ভাবে আত্মবিশ্বাস নিয়ে বাঁচতে শিখেছি। রোজকার যুদ্ধে ক্ষত বিক্ষত হতে হতে নিয়েছি ফুলের গন্ধ। আর প্রাণ ভোরে বেসেছি ভালো। সবকিছুর মধ্যে দেখেছি নতুন ভোর, অন্য আলোয় কখনো নতুন ভাবে সকাল ফিরে পেয়েছি কখনো বা মেঘলা আলোতে আমার আকাশ ভোরে গেছে , প্রাণপণে দুহাতে মেঘ  সরিয়ে খুঁজেছি রোদ্দুর। কখনো পেয়েছি, পাইনি কখনো বা। আপন নিয়মে সময় তার যেটুকু আমাকে তুলে দেবার তুলে দিয়েছে। কখনো বুঝেছি, কখনো বুঝিনি। অনেকটা পথ পেরিয়ে আসার পর মনে হয়েছে , পেয়েছিলাম। হয়তো পরে কখনো মনে হবে পেয়েছিলাম। 


আজ ল্যাব থেকে আসার সময়  রোজের মতো গেছিলাম আমার চাঁপাদের কাছে। আমি যেখানেই থাকি, চেষ্টা করি একটু ফুল রাখতে কাছটাতে। সে ঝরে যাওয়াই হোক বা কেনা। আজ ও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তবে গাছ থেকে টাটকা ফুল পাড়তে একটু কষ্ট হয় আমার, তাই খোঁজ করি, একটু পুরোনো। আজ নতুন বা পুরোনো জানিনা, তবে একগোছা ধপধপে সাদা ফুল, কাছে গিয়ে আলতো হাত দিতেই হাতে চলে এলো। ঘরে এসে সবকটা পর্দা সরিয়ে দিতেই কাঁচের ভেতর দিয়ে উছলে উঠলো পড়ন্ত বিকেলের মায়াবী, হলুদ নীলে মেশানো একটা আলো। তাড়াতাড়ি, গ্লাস এ ঠান্ডা জল দিয়ে ফুলগুলো রাখতেই যেন চারিদিকটা হেসে আমার দিকে তাকালো। কি যে অপূর্ব মায়া আছে ওই সাদা পাপড়ির ভেতর দিয়ে উঁকিমারা হলুদ আলোর মধ্যে দিয়ে। জানিনা। আর তাকে যেন আরো কি এক মায়ায় জড়িয়ে দিলো বিকেলের ওই আলো।
আমার সেই চিরপরিচিত চাঁপা যেন নতুন করে ধরা পড়লো অন্য চোখে। বুঝলাম, সমস্ত কিছু এক থাকা সত্ত্বেও ওই যে দেখার আলো যদি বদলে যায়, তাহলে বোধয় বদলে যায় সব ই।  নাহলে রাত তিনটের সেই চাঁপার সাথে আজকের এই চাঁপার মধ্যে পার্থক্য একটাই , ওই আলোটার। বাকি সেই এক ই মায়া , সেই মমতা, সেই স্নেহ, সেই ভালোবাসা। কম বেশি, দূরে কাছের, বদল ফেরতের সব তর্ক দূরে সরিয়ে দিয়ে, আমি শুধু চুপ করে দেখতে থাকলাম আধখানা চাঁদ কেমন ধীরে ধীরে ঢলে গেল পশ্চিমে। একেবারে চুপ করে দেখলাম, দেখলাম কোনো শব্দ না করে। কি হলে কি হতো, আর কি হয়নি সেসব প্রশ্ন থাক আজ। এই মুহূর্তের এই ক্ষণের প্রতিটা মায়া সত্যি, প্রত্যেকটা মমতা সত্যি। আর সত্যি এর গভীর অনুভব। ঠিক যেন ওই অন্য আলোর মতো। যে অনুভূতির আলোতে চারিদিক  মায়ের নরম আঁচল আর বাবার উষ্ণ আদর মাখা নিশ্চিন্ততার আশ্রয় পাওয়া শিশিরে ভেজা ভোরের নরম ঘাসের মতো স্নিগ্ধ, শান্ত হয়ে চোখ মেলে তাকায়। সেই পরম মঙ্গলময় অনুভূতি। আর সত্যি এই চুপ করা নৈশব্দ। শ্রান্ত আদুরে ঘুমন্ত পৃথিবী। আর অপার নৈশব্দ।

জানলার দিকে তাকাতেই চোখ পড়লো স্থির, অচঞ্চল দ্রুবতারা।  








Thursday, 13 September 2018

সবুজ

কখনো কখনো এত সবুজ এত সবুজ হয়ে থাকে চারপাশটা, যে আমার যেন ধাঁধা লেগে যায় চোখে। এত সবুজ এত সুন্দর কিভাবে হয় সবকিছু, সকাল থেকে রাত আবার রাত কেটে ভোর, যেন নেশায় থাকি, ঘোর লেগে থাকে যেন সবকিছুর মধ্যে। সেই ঘোর ভাগ করে নেবার মধ্যে এক অবর্ণনীয় আনন্দ আছে। হটাৎ বুঝতে পেরেছিলাম এক ই ভাবে দেখতে পারার মধ্যে, এক অনন্য নেশা আছে। তবে নৈসর্গকিতার স্বাদ একা নিতে পারাও কম পুণ্যের নয় বোধহয়। তাতে চারপাশের পরিবর্তনে কষ্ট টা একটু কম হয়, তাকে পরিণত ভাবে মনেও যেমন নেওয়া যায়, মেনেও তেমন নেওয়া যায়। 

আজ গনেশ চতুর্থী। আজ থেকে ঠিক একমাস পরে বোধহয় পুজো। আমাদের সবার প্রাণের পুজো। চারপাশের আকাশ বাতাস সব কিছু যেন বদলে যায় এই সময়ে। কি অসম্ভব ভালোলাগা। কি অবর্ণনীয় সৌন্দর্য্য। সেই সাদা সাদা কাশ ফুল গুলো নিশ্চই ভীষণ ভাবে তাদের মাথা নাড়াচ্ছে। আমি ছোট থেকে সবসময় ছবিতে দেখতাম কাশফুল। সেই প্রথম কলেজ এর ফ্রেশার্স এ কাশ ফুল দেখি নিজের চোখে। ছোট্ট একটা গ্রাম্য জায়গা, তার সমস্ত সিম্প্লিসিটি নিয়ে আমার সামনে দাঁড়িয়ে পড়েছিল হটাৎ। চারপাশের লোকজন, কথা সবকিছু ছাপিয়ে আমি শুধু দেখছিলাম ঘরের মধ্যে আমার কত সামনে রাখা একগোছা কাশফুল আর প্রদীপের আলোকে। আর বাকি সবকিছু যেন হয়ে গেছিলো irrespective, সবকিছুতে যেন রামধনু মাখানো ছিল। তারপরে কত জায়গায় গেছি, নতুন জায়গা, কত মানুষ, নতুন কথা, নতুন সম্পর্ক তবু আজ ও ওই দিনের সবকিছুর ঘোর এখনো যেন চোখ থেকে যায়নি। আজ সকালে এই সবুজ গুলো আবার আমায় সেদিনের সবুজের মাঝে সাদা কাশফুল গুলোকে মনে করিয়ে দিলো। 
সেদিন ও খুব ইচ্ছে করেছিল, একটু কাছে গিয়ে হালকা ছুঁয়ে দেখি, আলতো করে আদর করে আসি। করা হয়নি, আজ ও করা হয়নি।







Sunday, 9 September 2018

লিলি

দিনের বেশিরভাগ সময় টাই আমাকে থাকতে হয় একা। না, there is a difference  between loner and loneliness, আমি একা থাকি ঠিক ই কিন্তু আমি একাকিত্বে কষ্ট পাই তা কখনোই নয়। চারপাশের কত কিছু আছে, যা আমাকে কখনো একা বোধ করতেই দেয়না। আমার লেখা জোকা, আঁকা, গল্প, কবিতা, গান, সুর, ছন্দ, রান্নার এক্সপেরিমেন্ট, ঘর গোছানো, ফুল সাজানো, গাছে জল দেওয়া, আকাশ দেখা, পাখি দেখা, বকম বকম শোনা এই সব কাজে এই রবিবার গুলো যদি ভোরে না থাকে, তবেই হয় ভীষণ অস্বস্তি। জানি ভীষণ ই নন-সাইন্টিফিক বাকগ্রাউন্ডের গৃহস্থের মতো শোনালো তো কথা গুলো? কি করবো, আমার ভেতর থেকে যে ওই মাটির গন্ধটা মুছতে পারিনি এখনো। আর মুছবে বলে এমন কোনো চিহ্ন ও তো দেখতে পাইনা। 

আজ অনেক আগেই ওই সব কাজ শেষ হয়ে গেছে। আর এতদিনের মধ্যে আজ কেন কি জানি সত্যি ই একা বোধ হলো। খুব একা একা লাগছে আমার এই একলা দুপুরে। কেমন যেন হিংসে হচ্ছে, এই রবিবার দুপুর গুলোর অলসতা কে যারা প্রাণ ভোরে নিতে পারছে, তাদের ওপরে। না ঠিক হিংসে নয়। কিন্তু কেমন যেন একটা কষ্ট গলার কাছটাতে দলা পাকাচ্ছে। বুঝলাম এটা সেই বদমাশ মনখারাপ এর কারসাজি। আমার সাধের উইকেন্ড এর আনন্দকে মাটি করার চেষ্টায় আছে। জানেইতো না যে আমি করতেই দেবোনা সেটা তাকে।

আমি বুঝি। তাই, না কোনো দুঃখ নেই এতে। জীবিকার প্রয়োজনে জীবন কে তো অনেক সময় ই দূরে সরিয়ে রাখতে হয় আমাদের। আমার কোনো আক্ষেপ নেই এতে, অভিযোগ ও না। রবিবারে বাড়ি থেকে বেরোতে আর কে চায়। আমার পাশের মানুষটাকেও কিছু চলতে থাকা experiment এর জন্যে বাধ্য হয়েই যেতে হয়েছে।  আমারও কাজ যে নেই তা নয়, একরাশ কাজ পরে আছে, অনেক calculation , অনেক গুলো analysis , অনেক গুলো লেখা বাকি। কিন্তু ওগুলোর মধ্যে থাকা বাধ্যবাধকতার বাঁধন টা আমাকে কিছুতেই ওগুলোর দিকে তাকাতে দিচ্ছেনা। সপ্তাহের শেষ বা আর একটা সপ্তাহের শুরু যে আজ, কেন তাকাবো ওগুলোর দিকে, আজ যে রবিবার।  আজ যে সবাই একসাথে থাকার দিন। sunday নয়, শুধুই রবিবার। যেটা শুনলেই মনে হয় একটা ঝকঝকে মদির সকাল, গল্প আর গান শুনতে শুনতে এমনি ই বেশ বেলা গড়িয়ে নতুন কোনো খাবারের স্বাদ নিতে নিতে আসবে অলস মধ্যাহ্ন। সেই আলসেমি পাশাপাশি থাকা খুনসুটির সাথে মিশে গিয়ে বিকেলের নরম রোদের রক্তিম লালিমা এনে সলাজ হেসে তুলে ধরবে সন্ধ্যের গভীরতা। আর সন্ধ্যে, দিনের দিবাকরকে বিদায় দিয়ে মধুনিশিকে আলিঙ্গন করার সেই পরম পবিত্র এক ক্ষণ। দিনের এমন একটা সময় যে সময়টা আমার ভীষণ আপনার, nbrc থাকার দিনগুলোতে এই সন্ধ্যে গুলোকে আমি ভীষণ ভাবে মিস করি। শাঁখ প্রদীপ ধুপ ধুনোর মধ্যে দিয়ে এখনকার এই শরৎ কালের নরম হয়ে আসা সন্ধ্যে, তার আবাহন। কি গভীর শান্তি। আর তারপরে, এই সামনের কালী মন্দিরের আরতি, হালকা হেঁটে আসা বা এমনি ই ঘরে বসে গরম চা এর সাথে নিছক আড্ডা। একটা রবিবারকে পরিপূর্ণ করে তুলতে,  সপ্তাহের বাকি দিন গুলোকে বুস্ট up করার জন্যে আর কিছু চাইকি? 
একটা দিন, যখন কাউকে একটুও বেরোতে হবেনা। সারাদিন ধরে মুখ চলুক টুকটাক করে। খাদ্য রসিক যে আমি, রসনার তৃপ্তি না হলে কোনো রস ই যে আত্মস্থ হবেনা। আর তাই রন্ধন পটিয়সী বলে যে সুনাম টা আছে, তাকে বারবার সার্থক করে তুলতে আমি একটুও পিছপা হইনা। আর এসবের মাঝে, বুড়ো লোকটা? বুড়ো লোকটা থাকবেনা বুঝি? ওই লোকটা থাকুক মাঝখানে, অথবা তা না চাইলে প্লিঙ্ক ফ্লয়েড বা কাটি মেলুহাকেও আনা যেতে পারে guns and rose এ ও আমার কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু এই চারটে দেওয়াল এর মধ্যে যত আনন্দ হাসি কে ছুটির আলস্যের সাথে আনা যায়, আসুক সবকিছু একসাথে। হয়তো একটু কম বিজ্ঞান করা হবে। হয়তো একটু পিছিয়ে পড়বো অন্যদের থেকে, হয়তো আমাদের হাতে থাকা কোনো পুরস্কার চলে যাবে অন্য কোথাও। যাকনা, কি এসে যায় তাতে। তবু এই চার দেওয়ালের মধ্যের ফুলের গন্ধ এর যে মাতলামো তাতো আর অন্য কেউ ছিনিয়ে নিতে পারবেনা। 

আজকের আকাশটা ভীষণ নীল। তাতে ফুলো ফুলো সাদা সাদা গোবলু গোবলু মেঘের দল ভেসে যাচ্ছে। আমি খুশি, ওই বদমাশ মনখারাপ কিছুতেই কাবু করতে পারেনি আমায়। একটা আলস্য ভরা মায়াবী দুপুরের ইচ্ছে আমার এই নিছক ছেলেমানুষি রোজকার ইচ্ছের ব্লগটাতে লিখে রাখতে রাখতে ভাবছিলাম। ভাবছিলাম দূর থেকে ভেসে আসা কয়েকটা কথা। ইচ্ছে খাতার ইচ্ছের লিস্ট গুলো বাড়ছে। কোনোদিন বসবো হয়তো ওই লিস্ট গুলো নিয়ে। কিজানি। কাশের বনের যে হাতছানি উপেক্ষা করে আজ দৌড়ে বেড়াতে হচ্ছে, সেদিন হয়তো সেই হাতছানিতে সাড়া দিতে পারবো। জানি হালকা সুতোর কাজ করা ধপধপে সাদা নরম পর্দায় সেদিন ঝড় উঠবে। আর সেই ঝড়ের সাক্ষী হোক  শুধু ওই ভায়োলেট পিঙ্ক মেশানো একরাশ 'লিলি'। আর সেদিন, সেদিন ওই একরাশ লিলিকে জড়িয়ে ধরে বলবো এগুলো 'আমার'। তাকে জড়িয়ে ধরে, আদরে সোহাগে ভরিয়ে দিতে দিতে বলবো শুধু আমার। আমার। আমার। দূরে কোথাও সাদা পাথরের ওপরে টুপটাপ ঝরে পড়বে রক্ত রাঙা রঙ্গন। 

Saturday, 8 September 2018

Nobody should ever pay much attention to those who don't deserve and value for it./
but yes do keep behaviour as same as it /
let them think you emotional stupid
but you should know what actually mean by it/
those who play with emotions or lie for no reason/
we are nobody but time will give them life lesson/
we should just wait and watch/
and make our lives as best as we can do/
Sometimes we waste so much time just to improve life others'/
but to an extent, not much, let them feel that too/
However, it's my own instinct to love and care/
which I will keep unchanged for forever/
time changes, people get changes with time and surroundings/
no matter, no matter for anything/
No matter how far or near/
but I will be always there/
I may get hurt, I may go far/
however, everything I will keep unchanged in all endeavor. 😊

ইচ্ছেনদী

আমার ল্যাব টা মাউন্ট sinai এর ১০ তলায়, আর আমার ওয়ার্কিং ডেস্কটা একদম জানালার ধারে , বিশাল জানালা। মনে হয় মেঘ গুলো এখুনি ঢুকে পড়বে এর মধ্যে। ...