Saturday, 22 June 2019

নামকরণ

বৃষ্টি এলকি?
পশ্চিমের আকাশে কালো মেঘ, গাঢ়, ঘন, গম্ভীর। সূর্য্য অস্ত যেতে দেরি আছে কিছুটা। পশ্চিমের পথেই পা বাড়িয়েছে , পৌঁছনোর একটু আগেই রাস্তা আগলে দাঁড়ালো কৃষ্ণকায় মেঘের দল। সূর্যদেব বললেন, সেই ভালো লুকিয়ে থাকি কিছুক্ষন এই মেঘের কোলে। মাঝেমাঝে সেই মেঘের মধ্যে থেকে বিচ্ছুরিত হতে থাকলো ইন্দ্রধনুর মতন আপনার সাত রং। আর গভীর আকাশ, একদিকে তার মৌন গাঢ় নীল আর অন্যদিকে কৃষ্ণকালো মেঘের থেকে বিচ্ছুরিত সপ্ত ডিঙ্গার রূপকথায় নিজের গভীর অন্তস্থলের আনন্দ কে বর্ণনা না করতে পেরে শিহরিত হচ্ছে। সেই পুলকিত শিহরণ গোপন রইলোনা, ধরিত্রীর ওপরে, সবুজ বনানী কে মাতাল করে দিয়ে ব্যস্ত পৃথিবীবাসীর কাছে মেঘের গুরুগুরু সে খবর পৌঁছে দিলো। প্রচন্ড তাপ দগ্ধ প্রকৃতি অপেক্ষা করতে থাকলো আসন্ন বর্ষায় অবগাহনের। 
প্রকৃতির এই মধুর খেলা কখন যেন আবার এক রূপকথার স্বপ্নজাল রচনা করেছে। 
মনে পরে যাচ্ছে, বেশ কিছু আগের কথা। কত বয়স তখন? কি জানি। কি যায় আসে তাতে? মন ছিল খুব সবুজ। তুমি চাঁপা আনলে , এনেই বললে নাম দাও। তোমার সব কিছুতেই তখন নাম চাই। আমিও দিলাম। বললাম এ আমাদের সাঁঝবাতি। তুমি বলবে রূপকথাটা? আমি হেসে বললাম , থাকবে লেখা। প্রথম প্রথম সাঁঝবাতির কদর খুব, কবে ফুল আসবে, কচি পাতায় গাছ ভরবে, গন্ধে আকুল হবে আমাদের ১০ টা ৫ টার জীবনগুলো। গন্ধরাজ আর মাধবীলতার মধ্যে হেসে উঠবে সে। অপরাজিতার গাঢ় নীলে হবে তার নতুন অভিষেক। 
সেবারে সাঁঝবাতি ফুল দিলোনা। পাতা গুলো কেমন একটা হলদে হয়ে শুকিয়ে গেলো। তোমার রকমারি ফুলের বাগানে আরো নানান অভিজাত নিত্য নতুন কেয়ারি করা পাতার বাহারে খুব ব্রাত্য হয়ে পড়লো তার উপস্থিতি। আমাদের সাঁঝবাতি জ্বললনা আর কোনোদিন ই হয়তো বা। 
কথা ছিল, বৃষ্টির প্রথম জলে সে ভিজবে। কথা ছিল নতুন ভোরের প্রথম আলোতে সে ঘুম ভাঙাবে। কিন্তু শুধু আমরা কি সব সময় প্রথম আর নতুনকেই খুঁজি সবসময়, চিরন্তন কে নয়? কিজানি। তাই বোধয়। 
একটা ঠান্ডা হাওয়া দিলো, লেমনগ্রাস এর গন্ধ টা কেমন যেন নেশা নেশা। আচ্ছা আজ এতদিন পরে, ধরো যদি কোন প্রৌঢ় চশমার কাঁচটা আর একবার পরিষ্কার করে নিয়ে ফিরে তাকাতে চায়, সেই অভিমানে ভরা সোহাগী দিনগুলোর দিকে। বৃষ্টির সোঁদা গন্ধ, ভেজা মাটি আর ম্লান হয়ে আসা স্মৃতি কি তাকে মনে করাবে কত বলা না বলা প্রতিশ্রুতির গুলোর কাছে। সাঁঝবাতি উঠবে জ্বলে? নামকরণ সার্থক হবে? 






No comments:

ইচ্ছেনদী

আমার ল্যাব টা মাউন্ট sinai এর ১০ তলায়, আর আমার ওয়ার্কিং ডেস্কটা একদম জানালার ধারে , বিশাল জানালা। মনে হয় মেঘ গুলো এখুনি ঢুকে পড়বে এর মধ্যে। ...