Sunday, 16 June 2019

Fathers' day

পিতৃত্ব পালনের কোনো স্পেশাল দিন হয়, বা পিতাকে স্মরণ করার? কিজানি, হয় হয়তোবা। জানিনা। আমি তো প্রতিটা দিন তোমাকে মনে করি। প্রতিটা ক্ষণ তোমার দেখানো পথে চলতে চেষ্টা করি। 
তোমার আমার অনেক ফটো ও কোথাও নেই, তখন যে আমাদের যখন তখন ফটো তোলা হতোনা, তুমি আমি আমরা আছি সেই পুরোনো অ্যালবাম এর পাতায়, সেই বোধয় ভালো জানো , সেভাবে আমাদের শুধু তোমার আর আমার কোনো ছবি না থাকাই বোধয় ভালো। পৃথিবীর যা কিছু চিরন্তন যা কিছু অবিনশ্বর তাই তো নাকি সবসময় থাকে অগোচরে, চোখের আড়ালে, তাই এই বেশ ভালো। তোমার মান্তুর আর তার বাবার একসাথে কোনো ফটো নাহয় নাই রইলো তবে। 

তুমি আমার সবথেকে বড় ভরসা। ছিলে যেমন আজও তো তাই আছো। ল্যাব এ pcr না হলেও তুমি, মনখারাপ হলেও তুমি, মেনি কে অনেক্ষন দেখতে না পেলেও তুমি বা কোন গাছে কি ফুল হয়েছে তাতেও শুধু তুমি ই। আজ আর সেই তুমি চলে যাবার দিনটাকে মনে করতে চাইনা। কিভাবে কেমন করে যে তুমি তোমার ছোট মান্তুকে হটাৎ অনেকটা বড় করে দিলে, সেসব কথাও থাক আজ। শুধু তুমি সবসময় আশীর্বাদ করো সেই বজ্রকঠোর কুসুমকোমল চরিত্র টা নিয়ে আমি যেন সগর্বে মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকতে পারি। 

ভালোবাসা দুর্বলতা নয়, ভালোবাসা ভালোবাসাই। আবার তেমন ই অনেকের অনেক কিছু হাসিমুখে মেনে নেবার মানেই হেরে যাওয়া নয়, তাদের করুণা করাও তো হতে পারে। এই সব বোধ এখন আমার মধ্যে জাগরিত। এই বোধ গুলোকে আমি বিশ্বাস করি, সঙ্গে নিয়ে চলতে চাই। 

জানো বাবা, যত বড় হৈ , একটা একটা করে দিন যায়, বুঝতে পারি, তোমার দেখানো পথে চলা সহজ নয়, খুব কঠিন তা। 
জানোতো সেদিন খুব কষ্ট হয়েছিল, যখন আমি শুনেছিলাম আমি সবার কাছে ভালো থাকার জন্যেই নাকি সব কিছু করি। মনে পড়লো, এইরকম কথা একবার অনেকদিন আগে, তোমাকে কেউ বলেছিলো, তুমি নাকি ওই যে সব কিছু হাসিমুখে মেনে নিয়ে, বাইরের যত আঘাত সব নিজের ওই বুকের মধ্যে রেখে দাও, কেন করো তা, কেন কিছু বলোনা। তোমাকে কেউ কোনোভাবে এতটুকু আহত করলো মনে হলে, বা তার এতটুকু আভাস ও পেলে তোমার মান্তু যেন ভেঙে চুরচুর হয়ে যেত। ভীষণ রাগ হতো। সেদিন ওই লোকের কাছে ভালো থাকার কথাটা শুনেও মনে পরে গেছিলো হটাৎ, তোমার ওপর কিছুটা ঐরকম ভাবেই করা সেই অভিযোগ। ভালোবাসার ই অনুযোগ ছিল তা যদিও, তবু ছিল তোমাকে না বুঝে করা। আর সেটাই আমার বুকে বেজেছিল। তবু আজও তুমি আমাকে সেভাবেই রেখো বাবা, যেভাবে তুমি আমাকে গড়েছ। 

কঠিন যেখানে হবার, সেখানে যে আমি কতটা কঠিন, তা তো তুমি জানোই, সেইরকম কঠিন যেন না হতে হয় আমায় কারোর ওপরে, সেই কাঠিন্য কে আমি নিজেই ভয় পাই। তোমার মান্তু যেন তোমার আদোরে কুসুমকোমল হয়েই সবার কাছে আসতে পারে। বজ্রকঠিনতা তার থাকবেই। 

রেখো আমাকে ঠিক যেভাবে তুমি দেখতে চেয়েছো তোমার মান্তুকে। আর শোনো, কোনো চিন্তা করোনা, তোমার মান্তু ভালো আছে। খুব ভালো থাকবে সে। কিছুটি ভেবোনা। সব ভালো আছে। অনেক অনেক কথা আছে তোমার সাথে, কিছুই যেন আর বলতে গিয়ে বলা হয়ে ওঠেনা। মনে হয় আরো কত কথা, আরো অনেক। আরো অনেক। তারপর আরো থেকে যায় কথা। আরো। তোমার কাছে গুছিয়ে ভেবে চিনতে কথা বলার তো আর কিছু নেই, সব তোমার জানা। শুধু তুমি দেখো চারপাশের অনেক আঘাত অনেক হতাশা অনেক না পাওয়া, কিছুতেই যেন তোমার মান্তুকে তুমি যেভাবে তৈরি করতে চেয়েছো, সেখান থেকে সে সরে না আসে। আমাদের সময়ে ফাদার্স ডে জানতামনা, জানতামনা mothers day ও , আজ যদি তুমি সামনে থাকতে তুমি না চাইলেও জোর করে তোমার ভালোলাগার জিনিসে জিনিসে তোমায় ভরিয়ে দিতাম একেবারে। জানি তুমি বকতে, কিন্তু তবু দিতাম, জোর করে দিতাম। খুব জোর করতাম। আমার হাতে তুমি সেই যে বাঁধাকপির তরকারি খেতে পছন্দ করতে সেটাও রান্না করতাম হয়তো, হয়তো সেই আলু ডাঁটা বেগুন দিয়ে মাছের ঝোল টাও হয়তো করতাম। 😊সে যাই হোক, মনখারাপ করবোনা, আমি জানি তোমার মান্তুর এতটুকু মনখারাপ বা গম্ভীর মুখ তুমি সহ্য করতে পারোনা। তাই পরের জন্ম বলে যদি কিছু থেকে থাকে, তুমি আবার আমার বাবা হয়েই এসো , তোমাকে রোজ সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠে প্রণাম করে আমার দিন শুরু করবো। 

No comments:

তুমি আমার কে

 তুমি বললে কেন ভাবো আমায়, কে আমি তোমার  আমি বললাম তুমি। .. না কেউ তো নয়  কেউ তো নয়  তবু এই যে যখন শ্রাবণ মাসের বৃষ্টি ভিজে হাওয়া গায়ে এসে লা...