Sunday, 12 April 2020

সন্ধ্যে নামছে। ঠিক সন্ধ্যে নয়, গোধূলী। সূর্য্য সবে পাটে বসেছে। এবারে আসতে আসতে অস্তাচলে পাড়ি দেবে। কোনো কোনোদিন মাঝেমাঝে কত দীর্ঘ্য হয়ে যায়, আবার কোনো কোনোদিন কেমন চট করে চলে যায়। সব ই , সবকিছুই বোধয় perspective তাহলে। আমাদের ভালোলাগার ওপরে নির্ভর করে চলে সবকিছু। তাহলে অনিত্য কি। অনিত্য কি। কিছুই নয়। কিছুই স্থির নয় বোধয়। সব ই কেন পরিবর্তনশীল। সময়ের সাথে সাথে কেন সব বদলে যায়, কেন যেভাবে যা কিছু আমরা পাই তাই কেন আমরা চাইনা। আর চাওয়া, সেই চাওয়ার ও কত প্রকার, কত ধরণ। কেউ চায় রাশি রাশি বিলাসিতা। কেউ চায় সুখী গৃহকোণ। মনের মতো করে রান্না করে গুছিয়ে খাওয়াতে। এ পৃথিবীর মধ্যে স্থির শান্তি কেন নেমে আসেনা? ধরিত্রী কেন তার আপন মাধুরী এক ভাবে সবার সামনে এক রকম করে তুলে ধরেনা ? কেন কখনো কখনো এমন বিষাদ ময় বিষণ্ণতায় আচ্ছন্ন হয়ে থাকে মন। কেন মনের মধ্যে শুধু বলে চলি কেন কেন কেন। অথচ সে কেনো এর কোনো উত্তর আসেনা, কোনো উত্তর পাইনা। শুধুই আরো আরো বিষণ্ণতা ঢেকে আসে। 

আকাশ যেন আজ গভীর নীল রঙে ধ্যানমগ্ন। আসতে আসতে সূর্য্য তার দিনের সবটুকু কাজ গুটিয়ে ধীরে ধীরে আবীর রঙে সবকিছুকে রাঙিয়ে আজকের মতো বিদায় নিচ্ছেন। ভীষণ শান্ত, নিস্তব্ধ চারিদিক। কোথাও এতটুকু কোনো শব্দ নেই। যেন সমস্ত প্রকৃতি একসাথে হাত জড়ো করে দিনের দিবাকর কে বিদায় সম্ভাষণ জানাচ্ছে। আসতে আসতে আমার বিক্ষিপ্ত মন থিতু হচ্ছে। কেমন যেন ঘোর লাগছে। ঠিক ভুলের বিচারে, তিরস্কৃত ক্লান্ত শ্রান্ত মন এই ধ্যানমগ্ন প্রকৃতির সাথে একাত্ম হচ্ছে। জাগ্রত হচ্ছে বোধি। প্রাণপণে খুঁজছে তার নিরবিচ্ছিন্ন শান্তির স্থল। চোখের জল এর মধ্যে কেমন যেন একটা পবিত্রতা আছে। চোখের জল যেন আমাদের অন্তরস্থল কে গভীর স্নেহে অভিষিক্ত করে যায়। লেখার মধ্যে একটা অদ্ভুত কিছু ঘটলো। এই এখন ই লিখতে লিখতে হটাৎ এক ঝলকআলো এসে পড়লো আমার মুখে, ভেজা চোখে। অস্তগামীর বিদায় রশ্মি। দিনের শেষ আদর টুকু। কি ছিল ওই আলোর মধ্যে, দিনের বিষাদ এর জন্যে তিরস্কার, নাকি বা ভীষণ মায়া। ভীষণ যত্ন। যে মায়া , যে যত্ন টুকুর জন্যে সবসময় আমার মনের মধ্যে হাহাকার করে, যে যত্ন যে মায়া টুকু আমি কাউকে দেবার জন্যে উন্মুখ হয়ে থাকি। যে যত্ন সম্পর্ক বোঝেনা, বোঝেনা অধিকারের হাজারো বেড়াজাল, সেই যত্ন যেন পিতার কাছে তাঁর স্নেহের কন্যার কাছে আসার মতো করেই আমাকে ছুঁয়ে গেলো। 

আকাশ আরো লাল, চারিদিক আরো শান্ত আরো নিস্তব্ধ। শাঁখ এখানে বাজেনা, ধুপ জ্বালাবো। চন্দন ধুপ। বসবো আজ অনেক্ষন আজ আমার ঠাকুরের কাছে। না কোনো অভিযোগ নেই আমার তাঁর কাছে, কোনো জিজ্ঞাসা নেই। শুধু নিজের দিনের প্রাপ্তি টুকু নিবেদন করার আছে। কোনো এক গভীর বোধের গোপন প্রাপ্তি আমাকে এনে দিলো এক নির্বেদ, নির্লিপ্ত শান্তি। প্রার্থনা করি এই শান্তি যেন ছুঁয়ে যায় তোমাকেও, যে টানাপোড়েন তোমার মধ্যে চলছে, অস্থির করে রেখেছে, ক্লান্ত করে দিয়েছে, মুক্তি পাও তুমি তার থেকে। স্থির নিস্তরঙ্গ এই শান্তির জলে অবগাহনএর পরে ঝড় থামুক। বেল ফুলের নরম পাপড়ির মতো তোমার মন কে আগলে রেখো সকল আঘাত থেকে। 


No comments:

ইচ্ছেনদী

আমার ল্যাব টা মাউন্ট sinai এর ১০ তলায়, আর আমার ওয়ার্কিং ডেস্কটা একদম জানালার ধারে , বিশাল জানালা। মনে হয় মেঘ গুলো এখুনি ঢুকে পড়বে এর মধ্যে। ...