রাস্তা আমাকে সবসময় ভীষণ টানে। দুপাশে বিশাল বিশাল গাছ আর মাঝখান দিয়ে একটা লম্বা রাস্তা। শুধু যেন বলে এগিয়ে চল এগিয়ে চল। তবে শুধু সেই রাস্তাই বা কেন , ওই যে সকাল বেলাতে যখন ক্যাব করে বা অটো করে আসি, সকাল বেলাতে তখন রাস্তা ঝাঁট দিয়ে পরিষ্কার করা হয়। আমার তো বেশ লাগে সেটা দেখতে। দিল্লিতে সকাল একটু দেরিতেই হয়, মানে একটু পশ্চিমে তো তাই আমাদের ওখানকার থেকে একটু দেরিতে আমার সূয্যি হেসে ওঠে এখানে, তবে এখানে মানুষজনের সকাল খুব তাড়াতাড়ি শুরু হয়। একদম ঘুম ভেঙেই কাজের মধ্যে লোকে ঝাঁপিয়ে পড়ে। সেটাও আমার খুব ভালো লাগে। বাবা মা সবসময় বলতো সকাল হলো কাজের সময়। আর কি জানি কেন, কেমন যেন আমার মনে হয়, ওই যে রাস্তা পরিষ্কার, ওইখান থেকে শুরু হয় আমাদের দিনের। বিগত রাতের যত মলিনতা, আগের দিন এর যা কিছু না পাওয়া, সব কিছু সাফ করে, নতুন করে সুন্দর করে শুরু হয় আমাদের দিন। সেই এক ই রাস্তা, আবার নতুন করে সেজে ওঠে, নতুন পথ চলা। সব না পাওয়া, ব্যর্থতাকে পিছনে ফেলে আগামীর দিকে তাকানো। কি সুন্দর।
ঘুম থেকে উঠে যখন ব্যালকনিতে এলাম। একটা ঠান্ডা হাওয়া চলছিল। গত কাল রাতে একটু বৃষ্টিও হয়েছিল, সেই বৃষ্টি আমার মনখারাপের সঙ্গে মিশে গিয়ে কেমন এক শূন্য বাতাবরণের সৃষ্টি করেছিল। সকালেও তার রেশ যায়নি, ঘুম থেকে ওঠার আগেই চোখ বন্ধ করেই ভাবছিলাম বৃষ্টি হচ্ছে কি? সকালে বৃষ্টি আমার খুব মনখারাপ করায়।
বারান্দায় এসে কিন্তু এক অদ্ভুত সুন্দর সময়ের সাক্ষী হলাম। দেখলাম, পশ্চিম আকাশে কালো মেঘ আর পুব আকাশে লাল সূর্য্য। আর এই দুয়ের মাঝে, হালকা হালকা কালো লালে মেশানো রঙে সমস্ত আকাশ একদম আদুরে হয়ে ঘুম চোখে তাকাচ্ছে। যেন কোনো ছোট্ট শিশু ঘুম ভেঙে চোখ রগড়াতে রগড়াতে মা এর আঁচল খুঁজছে। কেমন ঘোর লেগে যাচ্ছিলো আমার। ঘোর কাটলো নিচে জমাদারের রাস্তা পরিষ্কারের শব্দে। দিন শুরু র সুর, একটু হয়তো কর্কশ, কিন্তু তাতে কি? খুব সত্যি যা কিছু হয়ে থাকে, তাওতো সবসময় মধুর হয়না, কখনো কখনো তো খুব কর্কশ ও তো লাগে, মেনে নিতে কষ্ট হয়, মনে হয়, এই সময় এই সত্যি টা কি আমাকে না বললেই হতোনা। তবু সত্যি টাকে ইনিয়ে বিনিয়ে মিথ্যে করে সাজিয়ে গুছিয়ে না বলে সোজাসুজি পরিষ্কার করে বলে দেওয়াই বোধয় ভালো। প্রথমে কর্কশ লাগলেও, সময়ের সাথে সাথে, মিথ্যের বাহ্যিক চাকচিক্য খসে পরে যায়, কিন্তু সত্যি তার আপন সৌন্দর্য্যে আরো উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।
একটু পরে দিনের শুরুর সাথে তাল মেলাতে মেলাতে আমার আজকের চলা হলো শুরু। রাস্তা তখন পরিষ্কার হয়ে গেছে , কুট্টুস গুলো লেজ নাড়তে নাড়তে অলস ভাবে এদিক ওদিক ঘুরে বেড়াচ্ছে। স্কুল কলেজ এর ছেলে মেয়েরা দাঁড়িয়ে, ছেলেরা কেউ একটু আড়চোখে কেউ বা একটু desparately মেয়েদের কে দেখার চেষ্টা করছে। বেশ মজা লাগে আমার। ওদেরকে দেখলে মনে হয় এখনো প্রাণ আছে, এখনো প্রাণ ছড়িয়ে আছে চারিদিকে। হয়তো ওই একটু চাহনি একটু হাসি বারবার ক্লাস এর মাঝে মনে পড়বে ওদের। অপেক্ষা করে থাকবে আবার পরের দিনের ওই একটু চাহনির জন্যে। কি মিষ্টি, নিষ্পাপ চাওয়া। সময়ের সাথে সাথে হয়তো এরা আর কেউ ই কারো সাথে থাকবেনা, বা থাকলেও হয়তো সেই চাহনির চাহিদা থাকবেনা, আবার হয়তো বা নিশ্চই কেউ কেউ ওই চাহিদা ধরে নিয়ে এক ই ভাবে পথ চলবে। সে যাই হোকনা কেন, যা কিছু হবে খুব ভালোই হবে। যে যার মতো করে নিজের মতো করে পথ বাছবে, সেই পথে চলবে। রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে কতজনের সাথে দেখা হবে।কখনো বন্ধুর, কখনো মসৃন পথ। কত মোড়, কত বাঁক। কোন বাঁকে কি অপেক্ষা করে আছে আমরা কেউ জানিনা। destiny , কোথায় কিভাবে কাকে চেনাবে কিছু জানিনা। তবু ওই পথ বড় সুন্দর। বড় নেশা আছে চলার মধ্যে। আর ওই পথ দিয়ে হেঁটে আসা সবকটা ধাপ, সমস্ত stepping সেই সময়ের জন্যে যাই হোক না কেন, পরে যখন আমরা ফিরে তাকাবো, দেখবো ওই স্টেপ গুলোই ছিল হয়তো আমাদের জীবনের জন্যে বেস্ট। আমাদেরকে শিখিয়ে দিয়ে গেছে জীবনকে।
গতকাল রাত থেকে একটা মনখারাপ, একটা শূন্যতা, ঠিক ভুল এর এক দোলাচল এর মধ্যে ছিলাম। কেমন যেন এক ক্লান্তি আমার সারাদিনটাকে শ্রান্ত করে দিছিলো বারবার। ভীষণ এক যুদ্ধ চলছিল মনের মধ্যে। একটা অদ্ভুত টানাপোড়েন এ বড় পরিশ্রান্ত হয়ে যাচ্ছিলাম বারবার।
বিকেলের কফি, খুব প্রিয় আমার। পড়ন্ত রোদে ক্যাফেটেরিয়ার সামনের বাগানটা খুব মায়াবী হয়ে ওঠে। একটা proof কারেকশন নিয়ে কথা হচ্ছিলো। আমাকে দিয়ে একজন বললো, তুমি ই দেখো, এটা , probably you are the best person to do a unbiased judgment. আমি কেন বলাতে সে বললো because you could see things more simply. উফ এই লেখাটা যে লিখেছে, এতো ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে জটিল করে লিখেছে যে তার থেকে সার বস্তু খুঁজে বের করাই মুশকিল। you do it.
সত্যি তো যে সত্যি আর সিম্প্লিসিটির আমি বড়াই করি, যে সিম্প্লিসিটি আমি খুঁজতে পারি বলে, লোকে unbiased judgment করাতে চায়, সেই আমি জীবনের আসল দিক টা যে ভুলেই যাচ্ছিলাম। simplicity. অনেক বেশি কিছু না ভেবে সোজা ভাবে থাকাই তো জীবন। জীবন তো এত জটিল নয়। একটা সরল রাস্তা যে। সেই রাস্তায় পাশে হেঁটে যাওয়ার মধ্যে কোনো জটিলতা নেই। ভালোলাগার মধ্যে কোনো গ্লানি নেই। কোথাও কাউকে এতটুকুও কোনো ঠকানো নেই, ফাঁকি নেই। বরং ভালোলাগাটা কুড়িয়ে নিয়ে, সত্যি টাকে সাথে করে পাশের মানুষটার হাত কি শক্ত করে ধরা যায়না? পড়ন্ত বিকেলের রোদ , সকালের নরম ভাবনা গুলোর মিষ্টতাকে আবার ফিরিয়ে দিয়ে গেলো, আর তার সাথে মিলেমিশে এক হয়ে অনন্য মায়াজাল তৈরি করে দিলো। মনে হলো ঠিক যেন একটা রাস্তা, আর কেউ যেন হাত ধরে রাস্তা পার করে দিলো।
সত্যি তো যে সত্যি আর সিম্প্লিসিটির আমি বড়াই করি, যে সিম্প্লিসিটি আমি খুঁজতে পারি বলে, লোকে unbiased judgment করাতে চায়, সেই আমি জীবনের আসল দিক টা যে ভুলেই যাচ্ছিলাম। simplicity. অনেক বেশি কিছু না ভেবে সোজা ভাবে থাকাই তো জীবন। জীবন তো এত জটিল নয়। একটা সরল রাস্তা যে। সেই রাস্তায় পাশে হেঁটে যাওয়ার মধ্যে কোনো জটিলতা নেই। ভালোলাগার মধ্যে কোনো গ্লানি নেই। কোথাও কাউকে এতটুকুও কোনো ঠকানো নেই, ফাঁকি নেই। বরং ভালোলাগাটা কুড়িয়ে নিয়ে, সত্যি টাকে সাথে করে পাশের মানুষটার হাত কি শক্ত করে ধরা যায়না? পড়ন্ত বিকেলের রোদ , সকালের নরম ভাবনা গুলোর মিষ্টতাকে আবার ফিরিয়ে দিয়ে গেলো, আর তার সাথে মিলেমিশে এক হয়ে অনন্য মায়াজাল তৈরি করে দিলো। মনে হলো ঠিক যেন একটা রাস্তা, আর কেউ যেন হাত ধরে রাস্তা পার করে দিলো।
আর আমি প্রথম সেন্টেন্স টাতেই দেখলাম একটা সেমিকোলন। সেমিকোলন, A semicolon is when an author could have chosen to end a sentence, but chose not to.
আঃ. beutiful . Life is beautiful .
No comments:
Post a Comment