Saturday, 31 March 2018

প্রতিধ্বনি

একটা অবাক করা গোধূলী হটাৎ আমাকে নিয়ে গিয়ে ফেললো আমার এক স্বপ্নের জগতে। কিভাবে সম্ভব হলো। কেমন করে আমার ভালোলাগার কথা আমার ই সামনে এসে পৌঁছলো। বলিনি তো কখনো। তাহলে কিভাবে হলো এই মেলবন্ধন।
সূর্য্য তখন পাটে বসেছে, অস্তগামীর বিদায় বেলায়, বোধয় বিদায় সম্ভাষণ জানাতে, পুব আকাশে ধীরে ধীরে আপন মুখ তুলে তাকিয়েছিলো কুমুদিনী। সেই অপূর্ব মেলবন্ধন। সেই সময় হটাৎ দূর থেকে আমার কাছে ভেসে এলো কিছু স্বপ্ন। সে স্বপ্নে অনেক কথা ছিল, অনেক সুর ছিল, ভয় ও ছিল, পাছে ওই  স্বপ্নের ঘোর চোখে লেগে যায়। 

তাড়াতাড়ি স্বপ্ন থেকে জেগে উঠতে উঠতেও যেটা পারলামনা সেটা হলো, ওই স্বপ্নের থেকে একটা শব্দ কেন কিজানি আমার মনে আমার নিজের একেবারে নিজের এক স্বপ্নকে মনে করিয়ে দিলো। দোলনা। দোলনা আমার ভীষণ প্রিয়। আমার স্বপ্ন দিয়ে সাজানো একটা জগৎ ছিল, আজ আর নেই তা বলবোনা, তবে ওই যে জীবিকার তাগিদে জীবন কে বন্ধ করে দিতে হয়েছে। তবু স্বপ্ন তো আছেই, আজ হটাৎ করে আমার সেই স্বপ্নের প্রতিধ্বনি শুনতে পেলাম। কিভাবে, এ সম্ভব হলো আমি জানিনা, কখনোতো বলিনি, তবু কিভাবে এক ই রূপ, রং, রস , গন্ধ নিয়ে আমার স্বপ্ন আমার ই সামনে এসে দাঁড়িয়ে আমাকে একেবারে স্তব্ধ করে দিলো বেশ কিছুক্ষনের জন্য। 

স্বপ্ন হয়তো খুব পার্থিব। অপার্থিব কিছুই নেই এখানে। হয়তো বা বড় বৈষয়িক ও। তবু এ আমার বেঁচে থাকার অঙ্গ। তাই ভাবলাম থাকনা, আজ নাহয় আমার ভালোলাগা, আমার কথা হয়ে, পার্থিব স্বপ্ন কে বয়ে নিয়ে থাক এখানে লেখা। অনেক দিন পরে যখন কখনো অন্য কেউ বা অন্য আমি বা এই আমি ই পড়বো , তখন ভাববো আজকের ই মতো, ঠিক এই আজকে যেমন আমার হটাৎ মনে পরে গেলো একটা আমার পার্থিব স্বপ্নের কথা....একটা বাড়ি, বাগান দিয়ে ঘেরা। বাড়িটার ২ টো দেওয়াল হবে শুধু কাঁচ এর। ঠিক আমার nbrc এর ঘর টার একটা দেওয়াল যেমন শুধু কাঁচের। ঐরকম কাঁচের হবে। পুরোটা। আর পুবদিকে জানালা থাকবে, অনেক বড় বড়। চাঁদনী রাতে সেখান দিয়ে চাঁদের আলো ভাসিয়ে দিয়ে যাবে আমার বিছানা, পড়ার টেবিল, লেখার খাতা, পেন রাখার জায়গা, violin এর তার আর ফুলদানি তে রাখা ফুল ও ওই চাঁদের আলোয় হয়ে উঠবে মায়াবী। আর চৈত্র মাসে ভেসে আসবে গন্ধরাজ আর বেলির আদর। শরতের শিউলির আলতো হাসিও আমি দেখতে চাই ওই জানলা দিয়েই। কিন্তু এতো হলো ঘরের ভিতরের কথা। আসল সুর শুরু হবে আমার ওই ঘরের বাইরের বাগান থেকে। বাগানের গেট টা হবে ঠিক আমার ছোটবেলার বাড়ির আগের গেট টার মতো। আধখোলা, রক্তনীল করা অপরাজিতা আর মাধবীলতায় মোড়া। বসন্তের পরে যখন গাছে গাছে কচি পাতারা খেলা করবে, বাতাস যখন বারবার এলোমেলো করে দেবে আমাদের সমস্ত ভাবনার ডালি, তখন চাঁদনী রাতে ফুলের গন্ধের মাঝে একটা দোলনা থাকুক না.....আর সেই দোলনা যদি ফুলের হয়,?জানি ভাবনা বোধয় একটু বেশি ই বাড়াবাড়ি করে ফেলেছে। ক্ষতি কি, এ আমার একান্ত আপনার স্বপ্ন চয়ন। আমার সেই ফুলের দোলনা, একটা ছোট্ট নীল পদ্ম দীঘি। হালকা ভাবে কখনো তা দেবে আমাদের ভিজিয়ে আবার কখনো তার পাড়ে বসে হবে নতুন কোনো স্বপ্ন চয়ন।  থাকবে একরাশ শিউলির কোলাহল। গন্ধরাজের পাগলপারা আহ্বান। সবুজ ঠিক এখানকার যে সবুজ টা আমার ভীষণ প্রিয়, সেই চিকন সবুজ রঙের মাঝে আমার স্বপ্নদ্বীপ এ সবসময় হবে একটা ঝকঝকে সকাল , দুপুর আসবে মদির হয়ে, আলোছায়ার স্বপ্ন জাল বুনে। সন্ধ্যা হবে শান্তি স্তব এর মধ্যে দিয়ে আর রাত্রি নামবে নিস্তব্ধ, সুন্দরকে আলিঙ্গন করে। সেখানে চাঁদনী রাতে ঝুলন এর রোমাঞ্চতা শিহরণ জাগিয়ে যাবে, একাদশীর বাঁকা চাঁদ দেবে স্বপ্ন দেখার আহ্বান। গাঢ় অন্ধকার এর রাতে থাকবে হাজার তারার রোশনাই। আর এই সব কিছুর মধ্যে দিয়ে আমরা অপেক্ষা করে থাকবো আগামীর। আর দুচোখ ভরে স্বপ্ন দেখবো। বেঁচে থাকাটা প্রাণ ভরে, প্রতিনিয়ত অনুভব করে চলবো। আর স্বপ্ন এঁকে নেবো বারবার, ওই মায়া কাজল চোখে দিয়ে চলোনা আমরা আমাদের প্রতিদিনের প্রতিনিয়ত সকল ঘাত প্রতিঘাত কে অস্বীকার করে, স্বপ্ন দেখি। চলো বাঁচি আবার বাঁচার আনন্দে।
একদিন এই স্বপ্ন আমি প্রতিনিয়ত দেখতাম। আমরার আর একজন কে, তা জানার তখন প্রয়োজন ও ছিলোনা , তার অনুভব ও ছিলোনা, আজ সময়ের সাথে সাথে সে স্বপ্ন এর বীজ ঘুমিয়ে পরেছিল. হটাৎ দূর থেকে ভেসে আসা এক প্রতিধ্বনি খুব অন্যভাবে, অন্য মায়ায় আবার আমার সেই স্বপ্ন, স্বপ্নমাখা দোলনাকে মনে করিয়ে দিয়ে গেল। 






No comments:

ইচ্ছেনদী

আমার ল্যাব টা মাউন্ট sinai এর ১০ তলায়, আর আমার ওয়ার্কিং ডেস্কটা একদম জানালার ধারে , বিশাল জানালা। মনে হয় মেঘ গুলো এখুনি ঢুকে পড়বে এর মধ্যে। ...